১১ বছর পর কবর থেকে তোলা হলো শিবিরকর্মীর লাশ

নোয়াখালীতে ১১ বছর আগে গুলিতে নিহত শিবিরকর্মীর লাশ তোলা হচ্ছে। আজ দুপুরে বসুরহাট পৌরসভায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডেছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১১ বছর পর কবর থেকে মতিউর রহমান ওরফে সজীব (১৭) নামের এক ছাত্রশিবিরকর্মীর লাশ (হাড়গোড়) উত্তোলন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশটি তোলা হয়। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে সাইফুলের লাশ তোলার সময় কবর থেকে বুলেট সদৃশ একটি ধাতব বস্তুও উদ্ধার করা হয়েছে। এটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত সাইফুল ইসলাম ওই এলাকার মৃত আবদুল রহমানের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১১ বছর আগে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের চারজন কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই জামায়াতের কর্মী মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশি মামলা করেন। আদালতের আদেশে কবর থেকে সাইফুলের লাশ তোলা হয়।

লাশ উদ্ধারকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবেল উদ্দিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ (হাড়গোড়) তোলা হয়েছে। এ সময় বুলেট সদৃশ একটি ধাতব বস্তুও উদ্ধার করা হয়েছে। পরীক্ষার পর বলা যাবে, এটি বুলেট কি না।

২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমবেত হন। জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে করা বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দেয়। আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মী নিহত হন। যাঁদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়, তখন মামলাও হয়নি।

এ ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিহত সাইফুলের বড় ভাই মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের করা মামলায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামান, থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুধীর রঞ্জন বড়ুয়াসহ ১১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।