বগুড়ায় বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে আ.লীগ কর্মীকে গলা কেটে হত্যা

বগুড়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ কর্মী বাবর আলীছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে বাবর আলী (৫০) নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে  গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বারুনী সেতুর ওপর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় ফুলবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ।

বাবর আলী বগুড়া শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আকাশতারা এলাকার বাসিন্দা। একই ওয়ার্ডের ধাওয়াপাড়া বটতলা এলাকায় ‘রাহিম স্টোর’ নামে একটি মুদিদোকান ছিল তাঁর। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ফুলবাড়ি ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাবর আলী পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। পাশাপাশি জেলা যুবলীগের এক নেতার সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তাঁর। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। বাবর আলীকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মাশরাফি হিরো প্রথম আলোকে বলেন, বাবর আলী আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী এবং জেলা যুবলীগের সহসভাপতি লতিফুল করিমের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন।

বগুড়া জেলা যুবলীগের সহসভাপতি লতিফুল করিম বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিএনপির লোকজন আমার বাসায় হামলা-অগ্নিসংযোগ করে। সপরিবারে হত্যার চেষ্টা করে।  সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়ার পর তাঁরা আমাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন। বাবর আলী আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। আমার সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আড্ডা দিতাম। আমার সঙ্গে সখ্য কাল হলো তাঁর জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই  বিএনপির লোকজন তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের পাঁয়তারা করছিলেন। ওই নেতাদের ইন্ধনেই সন্ত্রাসীরা বাবর আলীকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে বাবার লাশের জন্য অপেক্ষায় থাকা ছেলে আবদুর রাহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা রাজনৈতিক কোনো  মিছিল-সভায় অংশ নেননি। যুবলীগের এক নেতার সঙ্গে সখ্য থাকলেও এটা রাজনৈতিক কোনো হত্যাকাণ্ড নয়। শহরের ধাওয়াপাড়া বটতলা এলাকায় অনেক বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল বাবার। সেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চোখ পড়ে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীর। ৫ আগস্টের পর দেশজুড়ে অস্থিরতার সুযোগে সন্ত্রাসীরা বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের চক্রান্ত করেন। সেই চক্রান্তের অংশ হিসাবেই গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী বাসার সামনে থেকে বাবাকে তুলে নিয়ে যান। এরপর ফুলবাড়ী এলাকায় করতোয়া নদীর ওপর বারুনী ব্রিজে নিয়ে সন্ত্রাসীরা গলা কেটে হত্যার পর তাঁরা আমার বাবার লাশ সেখানে ফেলে রেখে গেছেন।’

আবদুর রাহিম প্রথম আলোকে বলেন, বাবার খুনিরা সবাই তাঁদের মুখচেনা। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলে নিতেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।