নাটোরে বিএনপির ১৫০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা

নাটোর জেলার মানচিত্র

একই দিনে একই স্থানে কর্মসূচি পালন করা নিয়ে নাটোরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলামসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আইনজীবী নিউন হোসেন বাদী হয়ে আজ রোববার বিকেলে সদর থানায় মামলাটি করেন।

নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, আইনজীবী নিউন হোসেন বাদী হয়ে আজ বিকেলে সদর থানায় এজাহার দেন। এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় শহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ২৬ জন বিএনপি নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকেও আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মামলায় গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের আলাইপুরে সংঘর্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে গুলিবর্ষণ, হত্যাচেষ্টা ও মারপিটের অভিযোগ করা হয়েছে। বাদী নিউন হোসেন মুঠোফোনে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিম আহম্মেদ জানান, আজ বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলার অভিযোগ তদন্ত করে শিগগিরই আদালতে দাখিল করা হবে।

প্রসঙ্গত, জেলা বিএনপি শহরের উপশহর মাঠে গতকাল দুপুরে অবস্থান সমাবেশ ও ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কর্মসূচি উপলক্ষে তারা উপশহর মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজও শেষ করে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ কিছু দুর্বৃত্ত সেখানে গিয়ে মঞ্চ ভাঙচুর করে ও অগ্নিসংযোগ করে। শুক্রবার বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে একই স্থানে তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত জানায়। একই সঙ্গে ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

বৃহস্পতিবার রাতেই নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে উপশহর মাঠে একই দিন (শনিবার দুপুরে) শান্তি সমাবেশ করার প্রচারণা শুরু করে। গত শুক্রবার সকালে একই মাঠে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করলে শহরে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। গতকাল সকালে বিএনপি তাদের ইফতার মাহফিল কর্মসূচি বাতিল করে এবং দুপুরে আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের (দুলুর বাড়ি) সামনে সমাবেশ শুরু করে।

সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বক্তব্য দিতে শুরু করলে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিলসহ শহরের দিক থেকে উপশহর মাঠের দিকে রওনা হন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাথর ছোড়া ও গোলাগুলি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিপেটা করে এবং উভয় দলের মধ্যে মানবপ্রাচীর সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ২৫ জন ও বিএনপির পক্ষ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির গুরুতর দুজনকে রাজশাহীতে এবং আওয়ামী লীগের দুজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।