প্রার্থীরা প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও প্রশাসন নীরব: হিরো আলম
বগুড়ার দুটি আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম অভিযোগ করেছেন, অনেক প্রার্থী মাঠে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও প্রশাসন নীরব। তিনি কালোটাকা ছড়ানোর শঙ্কায় থাকার কথাও বলেছেন। তিনি প্রথম আলোর কাছে এ অভিযোগ করেন।
হিরো আলম বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমি লড়ছি কালোটাকা আর পুরো একটা বিরুদ্ধ পরিবেশের বিপরীতে দাঁড়িয়ে। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করে আমার মনোনয়ন বাতিল করে। হাইকোর্ট থেকে রিট করে মাঠে ফিরেছি। নির্বাচনী সার্বিক পরিবেশ এখনো আশ্বস্ত করার মতো নয়। অনেক প্রার্থী মাঠে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও প্রশাসন নীরব। শেষ মুহূর্তে প্রচুর কালোটাকা ছড়ানোর শঙ্কায় আছি। কালোটাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টা চলছে, কালোটাকার কাছে মানুষের সমর্থন পরাজিত হলে গণতন্ত্রের পরাজয় হবে। এর দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।’
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে হিরো আলম একতারা প্রতীকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের সেবা করার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য আমি এই নির্বাচনে লড়াই করছি। আমার কোনো কালোটাকা নেই, আছে লাখো মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা। নির্বাচনে টাকা ঢাললে সভা-সমাবেশে লোক ভাড়া করে আনা, মোটরসাইকেল শোডাউন করা সবই সম্ভব। কিন্তু লোক দেখিয়ে, শোডাউন করে ভোটারের সমর্থন পাওয়া যাবে না। ভোটারেরা মার্কা দেখে ভোট দেবেন না, প্রার্থীর জনপ্রিয়তা দেখে ভোট দেবেন। মাত্র কয়েক দিনে প্রচারণা চালিয়ে দুই নির্বাচনী এলাকা মাতিয়ে রেখেছি। মানুষের মুখে মুখে এখন হিরো আলমের নাম। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ।’
কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনে কালোটাকা ছড়ানোর অভিযোগ করছেন, তা জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামে আমার কর্মীরা সতর্ক আছেন। টাকা ছড়ানোর ভিডিও ও ছবি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। প্রমাণ পেলে তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য শুরু থেকেই আমার দাবি ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভোট চুরির সুযোগ করে দিতেই কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে আগ্রহ নেই।’
হিরো আলমের অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থীরা যাতে আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালান তা পর্যবেক্ষণের জন্য দুই নির্বাচনী এলাকায় ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করছেন। যখনই যে প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তখনই সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চলছে। কোনো প্রার্থী মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনেও বিষয়টি জানানো হবে।
নির্বাচনে কালো টাকা ছাড়ানোর অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। আমরা অভিযোগ আমলে নিয়ে কাজ করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’