টাঙ্গাইলের আনারস গেল দুবাইয়ে

রপ্তানির জন্য বাক্সবন্দী করা হচ্ছে আনারস। সম্প্রতি তোলাছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রথমবারের মতো মৌসুমি ফল আনারসের ছোট একটি চালান রপ্তানি হয়েছে। এই আনারস উৎপাদিত হয়েছে টাঙ্গাইলে। গত শনিবার চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে হিমায়িত কনটেইনারে এই চালানটি রপ্তানি করে ঢাকার সাউথ ব্রিজ অ্যাগ্রো। গত ছয় বছরে তাজা আনারস রপ্তানির প্রথম চালান এটি।

আনারস রপ্তানিকারক সাউথ ব্রিজ অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা অংশীদার রাশেদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, আমিরাতে আনারসের বাজার মূলত ফিলিপাইন, ভারত, ইকুয়েডর ও আফ্রিকার দেশগুলোর দখলে। আমিরাতে টাঙ্গাইলের আনারসের এটি মূলত পরীক্ষামূলক চালান। সফল হলে মৌসুমের সময় আনারস রপ্তানির ইচ্ছা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র জানায়, এই চালানটি রপ্তানি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ভেজিটেবলস অ্যান্ড ফ্রুটস ট্রেডিং কোম্পানিতে। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কেজি তাজা ফলের এই চালানে আনারসের পাশাপাশি অন্য ফলও রয়েছে। চালানটিতে আনারসের পরিমাণ ৭২ কেজি।

দেশি জাতের আনারস পাকার পর বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। পাকার পর মেয়াদ থাকে বড়জোড় এক সপ্তাহ। এরপরই পচে যায়। তবে আনারসের নানা বিদেশি জাত এনে দেশে চাষ হচ্ছে। এর একটি ফিলিপাইনের এমডি-২ জাতের আনারস। এই আনারস প্রাকৃতিকভাবেই দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায়। টাঙ্গাইলে এই আনারসের চাষ হচ্ছে। তাতে এই ধরনের আনারস রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশে বছরে দুই লাখ টন আনারস উৎপাদন হয়। ২১-২২ অর্থবছরে ২ লাখ ৬ হাজার টন আনারস উৎপাদিত হয়েছিল। ২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন হয় ১ লাখ ৯৬ হাজার টন। তবে সংরক্ষণে অভাবে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ আনারস নষ্ট হয়ে যায়।

এর আগে সর্বশেষ তাজা আনারস রপ্তানি হয়েছিল ২০১৮ সালের জুনে। ওই বছর ওমান ও মালয়েশিয়ায় আনারসের দুটি চালান রপ্তানি হয়। এরপর আনারস রপ্তানির আর তথ্য পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের সঙ্গনিরোধ রোগতত্ত্ববিদ সৈয়দ মুনিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমবারের মতো আমিরাতে দেশি আনারস রপ্তানি হওয়া সুখবর। চট্টগ্রামে যেহেতু সমুদ্রবন্দর রয়েছে, সে জন্য এখানে উন্নত মানের প্যাকিং হাউস ও সংরক্ষণাগার তৈরি করা গেলে আনারসের মতো মৌসুমি তাজা ফলের রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে।