রংপুরে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরতে বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগে দুই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
রংপুর শহরের দাসপাড়ায় মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে হিন্দু ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করার চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রীরা বিক্ষোভ করেছে। এ বিক্ষোভের জেরে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমান ও ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে হিন্দু ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষকসহ অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের পদত্যাগ ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তাদের অভিভাবকেরাও উপস্থিত ছিলেন। এই বিক্ষোভের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিক্ষোভরত কয়েকজন হিন্দু ছাত্রীকে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হিজাব পরতে বাধ্য করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করতে শোনা গেছে।
ভিডিওটি মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বলে মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় ওই স্কুলে উপস্থিত ছিলাম। সেই সঙ্গে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সভায়ও উপস্থিত ছিলাম। এলাকার পরিস্থিতি এখন ভালো রয়েছে।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক মোফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষকসহ দুজনের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। সেখানে হিজাব পরতে বাধ্য করার অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও কিছু অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারী ছাত্রীরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘গতকাল স্কুলের উদ্ভূত পরিস্থিতি জানার পর আমি ওই স্কুলে ছুটে যাই। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলে বসেই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও ধর্ম বিষয়ের শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই সঙ্গে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এরপর সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত হয়।’