পর্যটনের অপার সম্ভাবনা নিয়ে ‘সুনজরের’ অপেক্ষায় কয়রা
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে অবস্থিত খুলনার কয়রা উপজেলা। কয়রায় আছে মসজিদকুঁড় মসজিদ, রাজা প্রতাপাদিত্যের বাড়ি, খালে খাঁর ৩৮ বিঘা দিঘি, আমাদী বুড়ো খাঁ-ফতে খাঁর দিঘিসহ নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপনা। পর্যটনকে ঘিরে এ উপজেলায় আছে অপার সম্ভাবনা। তবে দীর্ঘদিনেও দর্শনার্থীবান্ধব প্রয়োজনীয় কোনো সুযোগ-সুবিধা গড়ে ওঠেনি। স্থানীয় লোকজনের দাবি, কয়রা উপজেলায় আধুনিক মানের ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারলে পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটবে।
কয়রা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে শাকবাড়িয়া নদীর এক পাশে লোকালয়, অন্য পাশে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন। লোকালয়ের পার থেকে দেখা যায়, জঙ্গলের ধারে ঘাস খাচ্ছে চিত্রল হরিণ। গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে বানর। সুন্দরী, গরান, কেওড়া, গেওয়া, পশুর, আমরুল ও গোলসহ নাম না–জানা অসংখ্য প্রজাতির বৃক্ষের সমাহার এ বনে। নদীতে দেখা যায় কুমির ও শুশুক।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি বিদেশরঞ্জন মৃধা বলেন, ‘আর কোনো উপজেলা সদর সুন্দরবনের এত কাছে নেই। এখান থেকে বঙ্গোপসাগরও খুব কাছে। সরকার যদি গুরুত্ব বিবেচনা করে এখানে একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলে, তাহলে ভালো হবে। স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হবে। সরকারও রাজস্ব পাবে।’
কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অধ্যক্ষ অদ্রিশ আদিত্য মণ্ডল বলেন, কয়রায় সুন্দরবনের ৫১ কিলোমিটার পড়েছে। এ ছাড়া প্রাচীন মসজিদকুঁড় মসজিদ দেখতে নানা বয়সী পর্যটকেরা ভিড় জমান। সরকার যদি কয়রায় একটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলে, তাহলে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা মানুষগুলো পেশাগত দিক থেকে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবন–সংলগ্ন কয়রা উপজেলায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে। পর্যটন করপোরেশন ইতিমধ্যে কিছু অর্থায়নও করেছে। এ ছাড়া কয়রার প্রাচীনতম মজজিদকুঁড় মসজিদটিকে কেন্দ্র করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলারও পরিকল্পনা আছে।’