দোকানদার, ইউপি সদস্যকে মারধর করা জাবি ছাত্রলীগের দুই নেতা বহিষ্কার
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ রোববার রাত আটটার দিকে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত ব্যক্তিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাব্বির হোসেন ওরফে নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে জয়। তাঁদের মধ্যে সাব্বির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র এবং মেহেদী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সাব্বির ও মেহেদী হাসানকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তার উপযুক্ত কারণসহ জবাব আগামী সাত দিনের মধ্যে সংগঠনটির দপ্তর সেলে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকায় গত শুক্রবার রাতে এক জুতার দোকান থেকে জুতা কেনার পর তা পলিশ করতে দেরি করায় ওই দোকানের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীকে মারধর করেন সাব্বির ও মেহেদী হাসান। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙ্গামাটি এলাকার পানির ট্যাংকের সামনে সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যকে মারধর করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। এ ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের বাসচালক আবদুল মান্নানের ছেলে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙ্গামাটি এলাকার বাসিন্দা।
ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শনিবার রাতে ইসলামনগর বাজার থেকে কাজ শেষে মশারি কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙ্গামাটি এলাকার পানির ট্যাংকের কাছাকাছি পৌঁছালে সাব্বির, মেহেদীসহ তিনটি মোটরসাইকেলে ছয়-সাতজন আমার পথ আটকায়। এরপর সাব্বির ও মেহেদি আমাকে বলে, “তুই ছাত্রদলের ক্যাডারদের আশ্রয় দিস। ছাত্রদলের সব কাজে তুই সাহায্য করিস।” এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁরা আমাকে মারধর করে। পরে বাড়িতে এসে শুনি, তাঁরা আমার বাড়িতেও আসছিল। আমাকে না পেয়ে আমার বাবাকে নানান বিষয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে গেছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে সাব্বির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই মেম্বার (আনোয়ার হোসেন রানা) ক্যাম্পাসে বিএনপির রাজনীতি চাঙা করার চেষ্টা করছেন। তিনি জনপ্রতিনিধি, জনগণের কাজ করুক। কিন্তু জনগণের কাজের আড়ালে তিনি বিভিন্ন নাশকতা করার চেষ্টা করছেন।