সিলেটে নদ-নদীর পানি কমেছে, তবে ৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানি কমেছে। তবে ভোগান্তি কমছে না বানভাসি মানুষের। ভাঙা স্থানে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। গতকাল রোববার সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর এলাকায়ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে আজ সোমবার সকালে জেলায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে আবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটে গত দুই দিন বৃষ্টি না হলেও আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী মঙ্গল ও বুধবার স্বাভাবিক বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে আর বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

গত দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছিল। তবে সেটি অনেকটা ধীরগতিতে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পানি ধীরগতিতে নামায় জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি চারটি পয়েন্টে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছিল।

সিলেট পাউবো বলছে, আজ সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে অবস্থান করছিল। নদীর ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। আবার কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত থাকায় পানি ধীরগতিতে নামছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

এদিকে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লার জলাবদ্ধ অবস্থার উন্নতি হলেও আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আবার জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নগরের মাছুদিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঈদের পরদিন থেকে তাঁদের ঘরে প্রায় হাঁটুপানি ছিল। এরপর এক স্বজনের বাড়িতে তিন দিন অবস্থান করে ঘরে ফিরেছেন। এখন আবার জলাবদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি হলে পরিবার নিয়ে আবার ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যা পরিস্থিতিতে জেলায় ৭২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। এর মধ্যে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৩১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল বিকেলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিলেট নগরসহ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় ১৯ হাজার ৭৩৮ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন।

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা বিতরণ অব্যাহত আছে। আগামী কদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।