ঋণখেলাপির মামলায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক মো. মুজাহিদুর রহমান এই নির্দেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা ব্যাংকের ঋণখেলাপির মামলায় হাইকোর্টের সঙ্গে পে-অর্ডার প্রতারণা ও ১১৫ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ না করায় চন্দনাইশ উপজেলার চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি), চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ও চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালত এই নির্দেশ দেন।
গত ৩০ এপ্রিল ঋণখেলাপির মামলায় জসিম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানাকে আদালত পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ আনতে জসিম উদ্দিন হাইকোর্টে ঋণের ১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন জানিয়ে জাল পে-অর্ডারের ফটোকপি দেন। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জামিন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর তাঁর জামিন স্থগিতাদেশ বাতিল করেন হাইকোর্ট।
এ ব্যাপারে জানতে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে জেসিকা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার জসিম উদ্দিন ৬০ কোটি টাকা ঋণ নেন। এক বছরের মধ্যে তা পরিশোধ করার চুক্তি থাকলেও আট বছরেও তিনি তা শোধ করেননি। ২০২২ সালে সম্পূর্ণ সুদ মওকুফ-সুবিধা নিয়ে তিনি ওই ঋণ পুনঃ তফসিল করেন। কিন্তু তারপরও পরিশোধ না করায় ওই ঋণ সুদাসলে প্রায় ১১৫ কোটি টাকা হয়েছে। ঋণের বিপরীতে নগরের লালদীঘি এলাকার ১৬ দশমিক ৫৯ শতক জমির ওপর নির্মিত সাততলা মহল মার্কেট তিনি ব্যাংকের কাছে জামানত রেখেছেন। ঋণ শোধ না করায় ২০২০ সালের ১৮ জুলাই জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে পদ্মা ব্যাংক। ওই মামলায় ২৯ জানুয়ারি জসিমকে সুদসহ ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দেন আদালত। তারপরও ঋণ শোধ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।