অধ্যক্ষকে মারধর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নিল দুর্বৃত্তরা

আহত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমানকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেছবি: সংগৃহীত

যশোর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমানকে মারধর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নিয়েছে স্থানীয় একদল দুর্বৃত্ত। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর আহত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমানকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যশোর শহরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (আরএন) সড়কের হাবিবুর রহমান দলবল নিয়ে এসে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ।

পুলিশ ও কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সড়কে অবস্থিত কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান। এ সময় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বলে। রাজি না হওয়ায় কক্ষের দরজা বন্ধ করে তারা তাঁকে চড়থাপ্পড় ও কিল–ঘুষি মারতে থাকে। পরে জোর করে অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। চলে যাওয়ার সময় তারা কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে কম্পিউটার নিয়ে চলে যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান প্রথম আলো বলেন, ‘শহরের আরএন সড়কের সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কলেজটি দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন সময় পদত্যাগ করার জন্য আমাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। রাজি না হওয়ায় আজ কলেজের মিলনায়তনে প্রকাশ্যে আমাকে মারধর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। শুধু মারধর নয়, তাঁরা কলেজের অফিসকক্ষে তাণ্ডব চালিয়েছেন। তাঁরা অফিসের কম্পিউটার লুট করে নিয়ে গেছেন। বিষয়টি কলেজের সভাপতি জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামকে জানানো হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

জানতে চাইলে কলেজের সভাপতি জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি শুনেছেন, তবে কলেজের পক্ষ থেকে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, শহরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সড়কে ১৯১৮ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজে ৮০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারী আছেন ২৫ জন।