আওয়ামী লীগ নেতার কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় দুজনকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ

নাটোর জেলার মানচিত্র

এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে বাকির টাকা চাওয়ায় একটি খাবারের হোটেলের মালিক ও তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত ব্যক্তিদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম তৌহিদুর রহমান ওরফে লিটন। তিনি নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক। আহত ব্যক্তিরা হলেন হোটেলের মালিক মাজেদুল ইসলাম (৫৬) ও তাঁর ছেলে শান্ত ইসলাম (২২)। তাঁরা বিপ্রবেলঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশে মাজেদুল ইসলামের একটি খাবারের হোটেল আছে। এই হোটেলে তৌহিদুর রহমান ও তাঁর সমর্থকেরা মাঝেমধ্যে বাকিতে খাওয়াদাওয়া করেন। এভাবে ৩০ হাজারেরও বেশি টাকা বাকি পড়েছে। বাকির টাকা চাইলেই হোটেলমালিক ও তাঁর ছেলের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিতেন তৌহিদুর রহমান। আজ বেলা দুইটার দিকে মাজেদুল ও তাঁর ছেলে শান্ত নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরপরই তৌহিদুর ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। প্রথমে লোহার তালা দিয়ে শান্তর মুখের দাঁত ভেঙে দেন। পরে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটান ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কপালে জখম করেন। এ সময় মাজেদুল ইসলামকেও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়।

বাকির টাকা চাইলেই হোটেলমালিক ও তাঁর ছেলের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিতেন তৌহিদুর রহমান।

হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন আহত দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনার পর নলডাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি।

আহত শান্ত ইসলামের বড় ভাই শামীম হোসেন জানান, ২০১৯ সালের সম্মেলনে তৌহিদুর রহমান যখন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন, তখন তাঁদের হোটেলে তিনি কর্মীদের খাওয়ান। ওই খাবার বিল বাবদ ৩০ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যেই বাকিতে খান তাঁরা। টাকা চাইলে মারপিটের হুমকি দেন। ওই আক্রোশে আজ তাঁর বাবা ও ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। তিনি বাবা-ভাইয়ের চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত আছেন। তবে রাতেই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তৌহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরে শান্ত ইসলামের সঙ্গে তার বন্ধু ও প্রতিবেশী মাহফুজের পারিবারিক বিষয় নিয়ে মারামারি হয়েছে। সেখানে আমি বা আমার কর্মীরা ছিল না। শান্ত আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে ওই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে অভিযোগ করছে। এটা অন্যায়। আমার কাছে মাজেদুল হোটেলের খাওয়া বাবদ কোনো টাকা পাবে না। টাকা পাওয়ার কথা গুজব।’

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কাউকে পাওয়া যায়নি। কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।