কুমারখালীতে মাছচাষিকে হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৬
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় আমিরুল ইসলাম (৫২) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের কুষ্টিয়া গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা কুমারখালী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
থানা-পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামে একটি কলাবাগান থেকে আমিরুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উত্তর চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রাখা আছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই প্রতিপক্ষের কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে অন্তত তিনটি বাড়ি ছাই হয়ে গেছে। এলাকার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আমিরুলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি গতকাল ইফতার শেষ করে বাড়ি থেকে কেশবপুরে তাঁর ইজারা নেওয়া পুকুরে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাঁকে জোর করে পাশের একটি কলাবাগানে নিয়ে যান প্রতিপক্ষের লোকজন। সেখানে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে যদুবয়রা ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অন্তত ছয়জনকে আটক করেছে। তাঁদের ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। মিজানুর যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, এলাকায় আমিরুলকে মাতব্বর হিসেবে মানতেন লোকজন। তিনি বেশ কিছু সালিস বৈঠকও করেছেন। এ নিয়ে তাঁর শত্রু তৈরি হয়ে গিয়েছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে ওই এলাকায় নৌকার প্রার্থী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রউফের পক্ষের মধ্যে বিরোধে চলছিল। আমিরুল এবার নৌকার পক্ষে নির্বাচন করেন। সে জেরেও এ ঘটনা ঘটত পারে।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, রাতেই অভিযান চালিয়ে যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিকেলের মধ্যে মামলা দায়ের হয়ে যাবে। যাচাই-বাছাই শেষে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। সকালে পুলিশ সুপার এইচ এম আবদুর রকিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।