সুনামগঞ্জ মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র ২০ শয্যায় উন্নীত, ৮ তলা ভবন নির্মাণ শুরু
প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর ‘সুনামগঞ্জ মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র’ ৬ শয্যা থেকে ২০ শয্যায় উন্নীত করতে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মা ও শিশুদের চিকিৎসাসেবার এই কেন্দ্রে ২০ শয্যার সেবা চালু হলে হাওর–অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
সুনামগঞ্জ শহরের ডিএস রোডে অবস্থিত গর্ভবতী মা ও শিশুদের প্রয়োজনীয় সেবাদানের জন্য ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র’। এখানে সেবাপ্রার্থী মা ও শিশুদের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও শয্যা আর বাড়েনি। শয্যা বাড়ানোসহ একটি ভবন নির্মাণের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার ধরনা দিয়েছেন। গত সপ্তাহে সেবাকেন্দ্রের জন্য আটতলা একটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে জেলা শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বল্প আয়ের পরিবারের গর্ভবতী মা ও শিশুরাই বেশি আসে। এখানে প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগে ৩০ থেকে ৪০ নবজাতক শিশুকে সেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা আছে। তবে চিকিৎসা কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ায় দুই বছর ধরে অস্ত্রোপচার বন্ধ আছে। স্বাধীনতার পর এটি সরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পরে প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন হলেও একটি টিনশেড ঘরে চলছে মূল সেবা কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ২০ শয্যা চালু হলে মানুষের উপকার হবে মন্তব্য করে সুনামগঞ্জ টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য (সনাক) কানিজ সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সন্তান প্রসবের জন্য একজন মায়ের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এই ব্যয় বহন করা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। যে কারণে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতি মায়েদের ভিড় থাকে বেশি।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার শীল জানান, ২০ শয্যার অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আটতলা একটি ভবন নির্মাণ হবে। গত সপ্তাহে মাটি পরীক্ষা হয়েছে। এখন মূল কাজ শুরু হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক ননীভূষণ তালুকদার বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ২০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো সে অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ হয়নি। তবে অবকাঠামো নির্মাণ হলে বর্তমানে যে লোকবল আছে, তা দিয়েই কার্যক্রম শুরু করা যাবে।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রের শয্যা বৃদ্ধি এবং একটি ভবন নির্মাণের বিষয়ে আমি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এখন সেটি ২০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। দ্রুত ভবন নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের জন্যও কথা বলব।’