বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের সুদীপ্ত
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় এবার পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত পোদ্দার তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। এমন ভালো ফলাফলের জন্য পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সুদীপ্ত।
এর আগে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজর ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বুয়েটে সুদীপ্তর সঙ্গে এডওয়ার্ড কলেজের আরও পাঁচ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এতে বেশ উচ্ছ্বসিত কলেজটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুদীপ্তর পৈতৃক বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার ভবানীপুর মাশুমদিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা প্রবীর কুমার পোদ্দার ব্যবসায়ী। মা মিতু পোদ্দার গৃহিণী। সুদীপ্তরা দুই বোন ও এক ভাই। সন্তানদের পড়ালেখার জন্য সুদীপ্তর বাবা পাবনা জেলা শহরের গোপালপুর মহল্লার মহিলা কলেজ পাড়ায় বাসা করেছেন। সুদীপ্তর দুই বোন স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। ছেলের এমন সাফল্যে ভীষণ খুশি পরিবারের সবাই।
প্রবীর কুমার পোদ্দার বলেন, ‘সুদীপ্ত ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখায় আগ্রহী। সে নিজের চেষ্টাতেই পড়ালেখা করে। খুব বেশি প্রাইভেটও পড়েনি। যতটুকু সহযোগিতা দেওয়ার তার দুই বোন সর্মিতা ও স্বর্ণা দিয়েছে। বোনদের ইচ্ছাতেই সুদীপ্ত পাবনা জিলা স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। প্রথমবারেই সেখানে ভর্তির সুযোগ পায়। পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্ট পুলে বৃত্তি পেয়েছে সুদীপ্ত। এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছে। এবার মেডিকেল কলেজসহ যত জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে, সবখানেই ভর্তির সুযোগ পেয়েছে সুদীপ্ত।’
নিজের টার্গেটের দিকে স্থির ছিলাম। পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের আদেশ-নির্দেশ মেনেছি। তাই হয়তো সফল হতে পেরেছি। আমি আমার পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সুদীপ্তর মা মিতু পোদ্দার বলেন, ‘ছেলের পড়া নিয়ে আমাদের কখনোই ভাবতে হয়নি। সে নিজেই নিজেরটা বোঝে, যত যাই হোক তার কাছে সবার আগে পড়াশোনা। তাই আমি মনে করি, ছেলে তার যোগ্য প্রাপ্তি পেয়েছে। তার এই সাফল্যে আমরা খুশি।’
কথা হয় সুদীপ্ত পোদ্দারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং তাঁকে টানত। তাই প্রথম থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। এইচএসসি পরীক্ষার আগেই কীভাবে বুয়েটে পড়া যায়, সে বিষয়ে বড় ভাইদের পরামর্শ নিচ্ছিলেন এবং নিজেকে বুয়েটে ভর্তির জন্য প্রস্তুত করছিলেন।
সুদীপ্তর ভাষ্য, ‘নিজের টার্গেটের দিকে স্থির ছিলাম। পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের আদেশ-নির্দেশ মেনেছি। তাই হয়তো সফল হতে পেরেছি। আমি আমার পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুব সরফরাজ প্রথম আলোকে বলেন, মেডিকেল কলেজের পর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সফলতা তাঁদের কলেজের একক কোনো কৃতিত্ব নয়। তাঁরা এমনিতেই মেধাবী শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রতি পরিবারের ব্যাপক দৃষ্টি আছে। কলেজে ঠিকমতো ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই তাঁরা এমন ভালো করেছে। ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে, এটাই তাঁর প্রত্যাশা।