চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রথম টোল দিলেন মেয়র, চার ঘণ্টায় গাড়ি চলেছে দেড় হাজার
চট্টগ্রাম নগরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে শহীদ ওয়াসিম আকরাম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এক্সপ্রেসেওয়েতে প্রথম টোল পরিশোধ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর আগে তিনটি উড়ালসড়ক নির্মাণ করলেও এগুলো থেকে কোনো টোল আদায় করত না সংস্থাটি। তবে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টোল আদায় করছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে টোল আদায় শুরু হওয়ার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত প্রথম চার ঘণ্টায় প্রায় দেড় হাজার গাড়ি চলাচল করেছে। এ সময় টোল আদায় করা হয় প্রায় ৯০ হাজার টাকা। সিডিএর একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত এক্সপ্রেসওয়েতে আপাতত পতেঙ্গা প্রান্তে টোল আদায় করা হচ্ছে। টোল আদায়ের জন্য চারটি বুথ রয়েছে। শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএর সরাসরি তত্ত্বাবধানে টোল আদায় করা হচ্ছে। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে সিডিএ।
২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধন হলেও তখন গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি। গত বছরের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্ধারণ করা টোলের হার পরিবর্তন করে গত বছরের ৩ নভেম্বর নতুন প্রস্তাব পাঠায় সিডিএ। ২৭ নভেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় টোলের হার চূড়ান্ত করে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচলের সুযোগ রেখে টোলের হার চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও ট্রেইলর ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়নি।
চূড়ান্ত হওয়া টোলের হার অনুযায়ী, সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে টোল দিতে হবে ৩০ টাকা। কার–জাতীয় গাড়িকে দিতে হবে ৮০ টাকা। জিপ ও মাইক্রোবাসের জন্য টোলের হার ১০০ টাকা। পিকআপ থেকে নেওয়া হবে ১৫০ টাকা। মিনিবাস ও ট্রাক ( চার চাকা) থেকে ২০০ টাকা করে, বাস থেকে ২৮০ টাকা নেওয়া হবে। ট্রাকের (৬ চাকা) জন্য ৩০০ টাকা এবং কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৭ সালে অনুমোদিত হওয়া এ প্রকল্পের কাজ সাড়ে সাত বছরেও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি সিডিএ। এখন পর্যন্ত শুধু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল অংশের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প নির্মাণ করার কথা। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ছয়টি র্যাম্প বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৯টির মধ্যে একটির কাজ শেষ হয়েছে। অন্য আটটির কাজ চলমান। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
ব্যবহারকারীরা এখন নগরের পতেঙ্গা প্রান্তে ওঠানামা করতে পারবেন। আর নগরের লালখান বাজারে নামার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া লালখান বাজার থেকে ওঠার সুযোগ রাখা হয়নি। তাই গাড়িচালকদের আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের শুলকবহর ও ২ নম্বর গেটের বেবি সুপারমার্কেট প্রান্ত ব্যবহার করে এক্সপ্রেসওয়েতে যেতে হবে।