জামালপুর পৌরসভার সোয়া ৪ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

জামালপুর পৌরসভার কাছে সোয়া চার কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিউবো।

জামালপুর বিউবোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জামালপুর পৌরসভা কার্যালয়, পানি সরবরাহ শাখা, সড়কবাতির সংযোগসহ ৫৯টি গ্রাহক হিসাব আছে পৌর কর্তৃপক্ষের নামে। এসব হিসাবের বিপরীতে পৌরসভার কাছে ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়েছে। তবে ২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতি মাসে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ চলতি বিল পরিশোধ করেছে। কিন্তু আগের বকেয়া কোনো বিল পরিশোধ করেনি। এর ফলে গত জুন মাসে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ওই সময় পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আগের বকেয়া বিল কিছু কিছু করে পরিশোধ করবে। কিন্তু কখনোই সেটা আর করা হয়নি।

সর্বশেষ গত আগস্ট মাসেও বিউবো জামালপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পৌর কর্তৃপক্ষকে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া আদায়ের জন্য একটি চিঠি দিয়েছেন। এই বিল পরিশোধের জন্য বিউবো জামালপুর বিতরণ বিভাগ থেকে পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদাও দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বিল পরিশোধ করা হয়নি।

বিউবোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বকেয়া বিল পরিশোধ নিয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছিল। বিল পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। এখন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যাপারে বিউবোর সঙ্গে কোনো যোগাযোগও রাখা হচ্ছে না। তাই এই বকেয়া আদায় হবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

বিউবো জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহিবুল আজাদ বলেন, বিভিন্ন সময়ের বিল বকেয়া রয়েছে ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। তবে ২০২১ সাল থেকে প্রতি মাসের বিল নিয়মিত পরিশোধ করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আগের বকেয়া বিল পরিশোধের উদ্যোগ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। গত জুন মাসে সংযোগ বিচ্ছিন্নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ওই সময় পৌর মেয়র প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এভাবে এত টাকা পরিশোধ করা অনেক সময়ের ব্যাপার। এ নিয়ে প্রতি মাসে পৌর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়। ওই টাকা পরিশোধে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে পৌর প্রশাসকের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে বকেয়া পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছিল। এখন আবার পৌর প্রশাসক পরিবর্তন হয়ে গেছেন। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নিলেও জনগণের কথা ভেবে পিছিয়ে যাওয়া হয়। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম বলেন, ‘পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা জনসেবামূলক কাজগুলো আগে করছি। পৌরসভার অনেকগুলো মিটার রয়েছে। পৌরসভার যে যে মিটারে বকেয়া রয়েছে, সেই সব মিটারের বকেয়া বিল এক এক করে পরিশোধ করা হবে।’