মণিরামপুরে পাওনা টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে হিন্দু বাড়িতে হামলা-লুটপাট, ছেলেকে অপহরণ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের ঘোষপাড়ায় গতকাল পলাশ ঘোষের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আজ সকালে তোলাছবি: প্রথম আলো

যশোরের মণিরামপুরে পাওনা টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সেখান থেকে ওই ব্যক্তির স্কুলপড়ুয়া ছেলে অপহরণ করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার জালালপুর গ্রামের ঘোষপাড়ায় পলাশ ঘোষের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে এক বিএনপি নেতার মধ্যস্থতায় প্রায় চার ঘণ্টা পর ওই ছেলেকে উদ্ধার করা হয়।

পলাশ ঘোষ জানান, টাকার লেনদেন ও চেক জালিয়াতির মামলার জের ধরে আবুল হাসান নামের এক শিক্ষকের নেতৃত্বে হামলা ও তাঁর ছেলে পিয়াস ঘোষকে (১৪) অপহরণ করা হয়েছিল। আবুল হাসান উপজেলার শাহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলার গালদা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থেকে একটি দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।

আরও পড়ুন

ঘটনার প্রসঙ্গে পলাশ ঘোষ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আবুল হাসান আমার কাছ থেকে সুদে তিন লাখ টাকা নেন। সেই টাকা পরে পাঁচ লাখে দাঁড়ায়। স্থানীয়ভাবে সালিস করে টাকা আদায় করতে পারিনি। একপর্যায়ে আবুল হাসান আমাকে ৫ লাখ টাকার একটা চেক দেন। পরে ব্যাংকে গিয়ে ওই টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা করি। সেই মামলায় আবুল হাসানকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও এক বছরের সাজা দেন আদালত। ওই মামলায় কিছুদিন কারাবন্দী থাকার পর আদালতের মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে জামিন পান আবুল হাসান।’

পলাশ আরও বলেন, ‘গতকাল রাত আটটার দিকে সাত-আটটি মোটরসাইকেলে করে আবুল হাসানসহ ১৫–২০ জন আমার বাড়িতে আসেন। তাঁরা আমার ছেলের (পিয়াস) গলায় ছুরি ধরে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। আমাকে মারধর করেন; বাড়িতে লুটপাটও চালান। হামলাকারীরা আমার স্ত্রী ও মায়ের গলা থেকে স্বর্ণালংকার, টাকা এবং তিনটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। টাকা না পেয়ে তাঁরা জোর করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেন। পরে তাঁরা আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল এবং আমার ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে চলে যান।’

আরও পড়ুন

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুজ্জামান। তাঁর উদ্যোগে প্রায় চার ঘণ্টা পর পিয়াস ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। শামসুজ্জামান বলেন, ‘টাকা–পয়সার লেনদেনের জের ধরে ওই ঘটনা ঘটেছে। গতকাল জামিনে বেরিয়ে এসে যশোর শহর থেকে লোক ভাড়া করে আনেন আবুল হাসান।’

এ ব্যাপারে আবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি না। এ ব্যাপারে কেউ আমাদের কিছু জানায়নি।’