চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর কাছে ১০ হাজার মার্কিন ডলার রয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে ১১ হাজার ৯৪ ইউরো। তরিকত ফেডারেশনের এই নেতা নিজে এবং স্ত্রী–পুত্ররা মিলে গাড়ি ব্যবহার করেন ৬টি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সামশুল হক চৌধুরী পটিয়া থেকে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। একাদশ সংসদে তিনি দলের হুইপ ছিলেন। এবার তাঁকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়নি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীও নিজেকে পাঁচবারের সংসদ সদস্য দাবি করেন (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনসহ)।
সামশুল হক চৌধুরীর কাছে ২০১৮ সালে ডলার ছিল আরও বেশি, ২১ হাজার ৯১১। এবার তা কিছুটা কমেছে। তাঁর বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৬২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিভিন্ন ভাতা ও সম্মানী বাবদ রয়েছে ২৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকানভাড়া বাবদ দেখানো হয়েছে ১৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
আগেরবার সামশুল হক চৌধুরীর আয় ছিল ৮৩ লাখ ৫৭ হাজার। সেবার ব্যবসা খাতে সবচেয়ে বেশি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছিল। এবার ব্যবসায় আয় কমেছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা আড়াই লাখ ও মার্কিন ডলার দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৩২। ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছে ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। নিজের নামে স্থায়ী আমানত ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আর ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত ও ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেখানো হয়েছে। স্ত্রীর নগদ টাকাও সামশুলের চেয়ে বেশি, ২৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এই সংসদ সদস্য দুটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির মালিক।
২০১৮ সালে সামশুলের নগদ ও ব্যাংকে জমা মিলে মোট টাকা ছিল এক কোটির কিছু বেশি। বন্ড, ঋণপত্র, শেয়ার ছিল তিন লাখ টাকার। এই খাতে তাঁর স্ত্রীর ছিল দুই লাখ টাকা। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩২ লাখ ৮২ হাজার টাকার। স্ত্রীর ছিল ২৩ লাখ টাকার। এবার অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ নিজের ২২ লাখ ও স্ত্রীর নামে ৯ লাখ টাকার রয়েছে। সামশুল গাড়ি ব্যবহার করেন দুটি। লাইসেন্স করা অস্ত্রও রয়েছে। তবে কতটি আছে, তা উল্লেখ করেননি।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে অকৃষি জমি রয়েছে ৯ কাঠার বেশি। এ ছাড়া ৯০০ বর্গফুট আয়তনের ৪ তলা একটা বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। আবার পাঁচ কাঠা ভূমির ওপর চারতলা অপর একটি বাড়ি দেখানো হয়েছে। স্ত্রীর নামে ১৫ কাঠার বেশি ভূমি রয়েছে। এ ছাড়া স্ত্রীর ৮টি টিনশেড দোকানঘর রয়েছে। ২০১৮ সালেও দুজনে একই ধরনের স্থাবর সম্পদের কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন।
সম্পদ বেড়েছে নজিবুল বশরের
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর পেশা ব্যবসা ও কনসালট্যান্সি। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস। আওয়ামী লীগের শরিক দলের এই প্রার্থীর নিজ নামে দুটি গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া স্ত্রী ও দুই ছেলের নামে আরও চারটি গাড়ি রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়। আছে নিজের দুটি লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্রও।
তাঁর বাৎসরিক আয় ৫৪ লাখ ৩৭ হাজার ৬২৭ টাকা। মোট স্থাবর সম্পত্তি (নিজ নামে) আছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার টাকার। স্ত্রীর নামে আছে ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পত্তি। মোট অস্থাবর সম্পত্তি (নিজ নামে) ২ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ৪৬৩ টাকা। এ ছাড়া তাঁর ১১ হাজার ৯৪ ইউরোও রয়েছে। ২০১৮ সালে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না তাঁর।
নজিবুল বশরের স্ত্রীর নামে মোট অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৪৭ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫২ টাকার। ২০১৮ সালে তাঁর নিজ নামে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। স্থাবর সম্পদ ছিল ২৫ লাখ টাকার।