মুক্তাগাছায় ভিনদেশি ফুল লিলিয়াম চাষ
অপরূপ সৌন্দর্য, নজরকাড়া রং আর ঘ্রাণের কারণে বিশ্বজুড়ে চাহিদার শীর্ষে লিলিয়াম ফুল। দেশে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় শীতপ্রধান দেশ থেকে আমদানি করা হয় এ ফুল। সম্প্রতি এই ফুলের বিস্তার ঘটেছে বাংলাদেশে। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মানকোন ইউনিয়নের আধপাখিয়া গ্রামে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে লিলিয়াম ফুলের চাষ হচ্ছে। এ ঘটনা ফুলপ্রেমীদের মধ্যে বেশ আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। প্রতিদিন ফুলের বাগানটি দেখতে আসছেন দর্শনার্থীরা।
শীতপ্রধান দেশগুলোয় সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপি, লাল ও বেগুনি বর্ণের লিলিয়াম ফুল দেখা যায়। এ জাতের ফুলে ছয়টি পাঁপড়ি থাকে, যা বেশ প্রসারিত হয়। বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাল তীর সিড লিমিটেডের সহায়তায় মুক্তাগাছার আধপাখিয়া গ্রামের কৃষক মহর আলী নিজের পলিনেট হাউসে এবার লিলিয়ামের ১০০টি কন্দ রোপণ করেন। নেদারল্যান্ডস থেকে নিয়ে আসা বীজ চাষ করে মাত্র ৩৪ দিনেই ফুল আসে বাগানে।
ফুলচাষি মহর আলী (৫৬) বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই ফুলের চাষ করি। কিন্তু এ ধরনের ফুল এর আগে কখনো পাইনি। ফুলটি দেখে খুবই পছন্দ হয়েছে। এবার প্রথমবার করলেও ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এই ফুলের চাষ করব।’
মুক্তাগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা পারভিন বলেন, ‘লিলিয়াম ইউরোপিয়ান ফুল। এ উপজেলায় এবারই প্রথমবার চাষ হয়েছে পলিনেট হাউসে। আমরা কৃষককে প্রশিক্ষণ দেব, যাতে লিলিয়াম ফুল চাষে লাভবান হন। এখানে একটি গাছে পাঁচ থেকে ছয়টি ফুল পেয়েছি। প্রতিটি স্টিক কৃষকেরা ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকেরা ব্যাপক হারে চাষ করলে বেশি লাভবান হবেন।’
লিলিয়াম ফুলের বাগান দেখতে প্রতিদিন মহর আলীর বাগানে যান দর্শনার্থীরা। ছবি তুলে নিয়ে যান তাঁরা। ফুলবাগান দেখতে আসা আসাদুজ্জামান বলেন, লিলিয়াম ফুল এ এলাকায় আগে কখনো দেখা যায়নি। শুধু টিভিতে বা ছবিতে দেখা যেত। এবার এলাকায় চাষ হয়েছে। ফুলটি দেখতে মোহনীয়।
লাল তীর লিমিটেডের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ণ-বৈচিত্র্য ও সুগন্ধের কারণে বাংলাদেশে লিলিয়াম ফুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। আমরা বাণিজ্যিকভাবে এ ফুল চাষে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কৃষকদের বিনা মূল্যে কন্দ সরবরাহ করছি। লাগানোর মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যেই ফুল হয়। চাষিরা ফুল চাষ করলে ঢাকায় মার্কেটের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে দেওয়ার কাজটি আমরা করছি। ঢাকায় এ ফুল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও স্থানীয় বাজারে দাম কিছুটা কম।’