গাজীপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আচরণবিধি মানলেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মহড়া (শোডাউন) বা প্রার্থীর সঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক না রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে সেই নির্দেশনা মানলেন না গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা। মূল ফটক থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন কমপক্ষে ১০ নেতা-কর্মী। পাশাপাশি সড়কেও ছিল নেতা-কর্মীদের মহড়া।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৫ মে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয়ের তথ্যমতে আজ সকাল পর্যন্ত মেয়র পদে ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে আজমত উল্লাসহ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ৭ জন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। এর সামনে দিয়ে গেছে রথখোলা সড়ক। সরেজমিন দেখা যায়, আজমত উল্লার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বেলা সাড়ে ১১টা থেকেই সড়কে নেতা-কর্মীদের ভিড় লেগে যায়। বেলা ১১টা ৩৭ মিনিটের দিকে মূল ফটকে আসেন আজমত উল্লা। এ সময় তাঁর সঙ্গে দেখা যায় কয়েক শ মানুষ। এত মানুষ দেখে মূল ফটক আটকে দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এরপর কিছু নেতা-কর্মীকে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করেন আজমত উল্লা। তখনো তাঁর সঙ্গে ছিলেন পাঁচজনের বেশি মানুষ।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আজমত উল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আচরণবিধি ঠিক রেখেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমার সঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক ছিলেন না। আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তাই সব কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা আসছেন। আমার পক্ষ থেকে কোনো শোডাউনও হয়নি।’
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আচরণবিধির বিষয়ে গতকাল বুধবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তাতে বলা হয়, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মহড়া করা যাবে না বা পাঁচজনের অধিক নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে না। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো ব্যক্তি, কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করলে নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা আচরণবিধির বিষয়টি কঠোরভাবে তদারক করছেন। তাঁর কার্যালয়ের ভেতর প্রার্থীর সঙ্গে পাঁচজনের বেশি কাউকেই আসতে দেওয়া হচ্ছে না। আচরণবিধি না মানায় ইতিমধ্যে দুজন মেয়র প্রার্থীসহ একজন কাউন্সিলরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আচরণবিধি অমান্য করলে পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।