সবুজ চা-বাগানে লাল শাপলার হাসি

শীতের সকালে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া চা-বাগানের ভেতরে ফোটা লাল শাপলাছবি: প্রথম আলো

চারপাশে সবুজ চা-বাগান। উঁচু-নিচু টিলার মাঝখানে একটি দীর্ঘ লেক। সেই লেকে হাজারো লাল শাপলা ফুলের হাসি। এই নয়নাভিরাম দৃশ্য হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নালয়া চা-বাগানের ভেতরের দলকি বিলের। এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।

চুনারুঘাট উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নালুয়া চা-বাগানের অবস্থান। এ বাগানের দক্ষিণে ২০ থেকে ২৫ একর আয়তনের দলকি বিল। বিস্তৃত বিলে ফুটে আছে হাজারো শাপলা।

গতকাল রোববার নালুয়া চা-বাগানের দলকি বিলের শাপলা ফুল দেখতে আসেন হুমাযুন কবীর চৌধুরী ও ইমরানা চৌধুরী দম্পতি। তাঁরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। এ দম্পতি বলেন, শীতে চা-বাগানের ভেতরে এমন লাল শাপলা আছে, প্রথমে বিশ্বাস করতেই চাননি। পরে এখানে এসে লাশ শাপলার হাসিতে চোখ জুড়িয়ে গেছে তাঁদের।

সারা বিশ্বে ৫০ প্রজাতির শাপলা আছে, কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ২ প্রজাতির শাপলা জন্মে
ছবি: প্রথম আলো

বাগানের অধিবাসী ও চা-শ্রমিক নৃপেন্দ্র খাড়িয়া প্রথম আলোকে বলেন, নালুয়া চা-বাগানের এ বিলের আগে তেমন কোনো পরিচিতি ছিল না। দু-তিন বছর ধরে দলকি বিলে লাল শাপলা দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। খুব সকালে ফুলগুলো বেশ সুন্দর দেখায়। সূর্যের তেজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাপলাগুলো নিজেদের কেমন যেন গুটিয়ে নেয়!

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক বানি আমিন খান বলেন, লাল শাপলা প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায়। ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ সেই সৌন্দর্যে মন ভরান। বিশেষ করে ভোরবেলায় শাপলা ফুলের পাঁপড়িতে হালকা শিশিরের ছোঁয়া সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়।

দু-তিন বছর ধরে দলকি বিলে লাল শাপলা দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন
ছবি: প্রথম আলো

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের খাল-বিলসহ নানা জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে শোভা ছড়ায় শাপলা ফুল। সারা বিশ্বে ৫০ প্রজাতির শাপলা আছে, কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ২ প্রজাতির শাপলা জন্মে। সাদা ও লাল রঙের শাপলা। একটা রক্তকমল প্রজাতির আর অন্যটা হলো শালুক প্রজাতির। শাপলার শিকড় পানির নিচে থাকে আর ফুল ডাঁটা দিয়ে পানির ওপর ফুটে থাকে। ফুলগুলো দেখতে তারার মতো মনে হয়।