মুক্তিপণের বাকি টাকার জন্য কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা
নাটোরে মুক্তিপণের পুরো টাকা না পাওয়ায় রাহুল হোসেন (১৬) নামের এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে একদল কিশোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। সোমবার দুপুরে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে গদাই রেলসেতুর পাশ থেকে রাহুলের লাশ উদ্ধার করে সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশ।
নিহত রাহুল হোসেন নলডাঙ্গা উপজেলার মদনহাট এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে। সে এবার স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার বাবা বেলাল হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।
বেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, মুক্তিপণের বাকি টাকা না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে তাঁর ছেলেকে কিশোরেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। ওই কিশোরদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার বিকেলে রাহুল এলাকার এক কিশোরীর সঙ্গে ভ্যানে বসে গল্প করছিল। এ সময় অপরিচিত চার কিশোর তাকে অজ্ঞাতনামা এক স্থানে ধরে নিয়ে যায়। তারা মুঠোফোনে রাহুলের বাবা বেলাল হোসেনকে ফোন করে জানায়, তাদের ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না দিলে তাঁর ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজমিস্ত্রি বাবা বেলাল হোসেন নিরুপায় হয়ে তাদের মুঠোফোনে তিন হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠান। সন্ধ্যার কিছু আগে অজ্ঞাতনামা দুই কিশোর রাহুলের বাড়িতে এসে আরও দুই হাজার টাকা নিয়ে যায়। মুক্তিপণের বাকি টাকাও পরিশোধের তাগাদা দিয়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে রাহুলের আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। রাহুলের বাবা বিষয়টি স্থানীয় থানায় জানান। পরে আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে ২৩৫ নম্বর গদাই রেলসেতুর পাশে রাহুলের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। লাশটি নাটোর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে।
বেলাল হোসেন বলেন, মেয়ের সঙ্গে গল্প করার বিষয়টি একেবারেই তুচ্ছ ঘটনা। ওই কিশোরেরা হয়তো অপরাধ চক্রের সদস্য। তারা টাকা আদায় করার জন্য এটা ঘটিয়েছে।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নরেশচন্দ্র দাস বলেন, রাহুল নামের ওই ছাত্রের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। তাকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।