বাড়ির সামনে দুপুর থেকে অনশন, ভোরে বউ হয়ে ঢুকলেন তরুণী
তরুণ-তরুণী দুজনে প্রেম করেছেন। একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে করেছেন ঘোরাঘুরি। রেস্তোরাঁয় খেয়েছেন, দিয়েছেন আড্ডা। তরুণ তাঁর প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাসও দিয়েছেন। হঠাৎ তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তরুণ। এতে তরুণী দিশাহারা হয়ে পড়েন। বিয়ের দাবিতে তরুণী তাঁর প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
তরুণীকে বাড়িতে আসতে দেখে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন তরুণের স্বজনেরা। কিন্তু বিয়ের দাবিতে অনড় তরুণী ফটকের সামনেই অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে অনশনের ১৫ ঘণ্টা পরে আজ রোববার ভোরে তরুণীকে তাঁর পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তরুণ। পরে তরুণীর ঠাঁই হয় তরুণের বাড়িতে। এমন ঘটনা ঘটেছে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে।
ওই তরুণ একটি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়েন। তরুণী বলেন, কলেজে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তরুণ তাঁকে বিয়ের কথা বলেন। বছর দেড়েকের সম্পর্ক তাঁদের।
এ বিষয়ে তরুণী বলেন, কিছুদিন ধরে তাঁকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে আসছিলেন তরুণ। সপ্তাহখানেক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে গতকাল শনিবার বেলা দুইটার দিকে তিনি ছেলের বাড়িতে যান। কিন্তু ছেলের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন। এ কারণে তিনি বাড়ির ভেতরে ঢুকতে না পেরে দরজার সামনে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। আশপাশের লোকজনও তাঁর পক্ষে ছিলেন।
প্রতিবেশীরা বলেন, দিন গড়িয়ে রাত হলেও মেয়েটি বাড়ির দরজার সামনেই বসে ছিলেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে বাধ্য হয়ে গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ছেলেসহ পরিবারের লোকজন মেয়ের দাবি মেনে নেন। পরে আজ ভোর পাঁচটার দিকে তাঁদের বিয়ে দেওয়া হয়।
আজ সকালে নববধূ বলেন, ‘ছেলেটিকে বিয়ে করা ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না। আমি ওকে ভালোবাসি। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
প্রতিবেশী ইয়াছিন আলী বলেন, মেয়েটি তাঁর দাবি আদায় করেই ছেড়েছেন। তাঁদের বিয়ে হওয়ায় প্রতিবেশীরাও খুশি।
ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হাসান কবীর। তিনি বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই বিয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়েছে।