মঠবাড়িয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত এক আওয়ামী কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত (৫০)। তিনি উপজেলার বাদুরা গ্রামের তোতাম্বর পঞ্চায়েতের ছেলে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী।
জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের স্ত্রী বুলি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আওয়ামী লীগ করতেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের সমর্থন করায় তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার দুপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর (ঈগল প্রতীক) সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের (কলার ছড়ি প্রতীক) সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকেলে শামিম শাহনেওয়াজের সমর্থক জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে বাদুরা বাজারে যাওয়ার পথে রুস্তম আলী ফরাজীর সমর্থক যুবলীগ কর্মী সিরাজুল ফরাজী সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় সিরাজুল ফরাজী ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের মাথায় কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের মাথায় ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নান্না মিয়া বলেন, জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে বাদুরা বাজারে যাওয়ার পথে একই গ্রামের সিরাজুল ফরাজী লোকজন নিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করেন। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীরের ওপর হামলা করেন।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সিরাজুল ফরাজী পলাতক থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত আমার কর্মী ছিলেন। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর লোকজন জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে হত্যা করেছে।’
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় গতকাল রাতে তাঁর স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। আজ সকালে জাহাঙ্গীর মারা গেছেন। এখন ওই মামলাটি আদালতের অনুমতি নিয়ে হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।