সীমান্ত নদী ইছামতিতে এবারও মিলন মেলা বসবে না, প্রতিমা বিসর্জন চলবে সীমিত পরিসরে

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা সীমান্ত নদী ইছামতিতে বিজয় দশমীর দিন দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে এবার মিলনমেলা বসবে না। তবে সীমিত পরিসরে প্রতিমা বিসর্জন চলবে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

ইছামতি নদী বিভক্ত করেছে বাংলাদেশ ও ভারতকে। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর ধরে দুর্গোৎসবের বিজয় দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে পশ্চিমবাংলা ও বাংলাদেশের মানুষের মিলনমেলা বসত ইছামতির তীরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে এই মিলনমেলা পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরও হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর বিজয় দশমীর দিন এখানে ভিড় করেন।

দেবহাটা সদরের তপন গোস্বামী (৭৫) বলেন, প্রতিবছর বিজয় দশমীর দিন ইছামতি নদী তীরের দেবহাটার টাউন শ্রীপুরে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো। দেবহাটার স্থানীয় প্রশাসন ও ওপারের টাঁকী পৌরসভা মিলে এ মেলার আয়োজন করত। কালীগঞ্জের বসন্তপুর থেকে দেবহাটার টাউন শ্রীপুর সীমান্ত এলাকা হয়ে উঠত লোকে লোকারণ্য। দুই বাংলার মানুষ সীমান্তের বেড়াজাল মুছে দিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য একাকার হয়ে যেত। সৃষ্টি হতো এক অন্যরকম আনন্দ, অন্যরকম দৃশ্য। ওপারে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ও এপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সতর্ক পাহাড়ার মধ্যে দর্শনার্থীদের ভিড়ে ঠাসা থাকতো ইছামতি নদী।

তপন গোস্বামী বলেন, আগে দুই বাংলার মানুষ এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকত। দুই বাংলার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এদিনে নদীর পাড়ে একে অপরের সঙ্গে দেখা করতেন। আনন্দে ভরে উঠতো নদীর তীর। ২০১৮ সাল থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে এ মিলন মেলা আইনশৃঙ্খলার রক্ষার অজুহাতে বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও মিলন মেলা বসে আসছে। এবারও ভারতের পাশে নানা আয়োজন করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের পাশে আয়োজন না থাকলেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

দেবহাটা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার ঘোষ জানান, মেলা বসবে না। তবে সীমান্ত নদীর বাংলাদেশের অংশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতে সীমিতসংখ্যক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

মুঠোফোনে ভারতের টাঁকী পৌরসভার বাসিন্দা শংকর মুখার্জী বলেন, ইছামতি নদীর ধারে অন্যবারের মতো এবারও নানা আয়োজন করা হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে। তবে বিসর্জন অনুষ্ঠানটি আগের মতো দুই বংলা এ সঙ্গে করতে পারলে মানুষ কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও আনন্দে মেতে উঠত।

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার জানান, মানুষ সমগমের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সীমিত পরিসরে প্রতিমা বিসর্জন হবে নদীতে। যাতে এ সময় কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে এজন্য নদীর মাঝবরাবর বিজিবি ও পুলিশ থাকবে। একই কথা জানিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ানুর রহমান।