হামলার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের (৩৭) নিহতের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। সঞ্জয় নেই, তা যেন মানতেই পারছেন না তাঁর মা–বাবা। ছেলেকে খোঁজে ফিরছেন তাঁরা।
পূর্ববিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাতে ভেড়ামারা উপজেলা খাদ্যগুদাম এলাকায় ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়। এ সময় তাঁকে রক্ষা করতে গেলে সঙ্গে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুজন কর্মী আহত হন। আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি সেখানে ছয় দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সঞ্জয়ের নিহতের ঘটনার পরপরই ভেড়ামারা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুপুরে ডাকবাংলোর সামনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থান। সেখানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমুল ইসলাম (ছানা)।
এ সময় সেখানে কাঁদতে কাঁদতে হাজির হন সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের বাবা দুলাল প্রামাণিক ও তাঁর মা। অঝোরে কাঁদছিলেন তাঁরা। নিহত সঞ্জয়ের বাবা দুলাল প্রামাণিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার বুকটা (সঞ্জয় কুমার) নাই, আমি কী নিয়ে নিজেকে বুঝ দিব, বুকটা চলে গেল।’
এ সময় দুলাল প্রামাণিকের স্ত্রী শাড়ির আঁচল দিয়ে স্বামীর চোখের পানি মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দুলাল প্রামাণিক বললেন, ‘আজ আমি রিকশা–ভ্যান চালি ছেলে মানুষ বড় করেছি। আমার সব হারায় গেল। বহু কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছিলাম, কী নিয়ে থাকব। আমার এ বৃদ্ধ বয়সে উপার্জনের জন্য এই ছেলেটাই ছিল, সেটাও চলে গেল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সঞ্জয় কুমারের মা বলছিলেন, ‘ছেইলি কুনঠি হারায় গেল, কোন রাস্তা দিয়ে গেল, কে নিল আমার ছেলেকে, কী করে দিল, একটুও রাখল না।’
সঞ্জয়ের পরিবার সূত্রে জানা গেল, সঞ্জয়রা দুই ভাই ও এক বোন। সবাই বিবাহিত। সঞ্জয় পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীর নাম বীথি রানী দে।