টাঙ্গাইলে পুষ্পস্তবক অর্পণ নিয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫

টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের একটি চিত্র। বুধবার সকালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনেছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা নিয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন পাঁচজন। আজ বুধবার সকালে টাঙ্গাইল শহরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত পাঁচজন হলেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার, তাঁর স্বামী মোশারফ হোসেন, জেলা শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন কিবরিয়া, শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাভলী তালুকদার ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমেনা বেগম। তাঁদের মধ্যে আহত আমেনা বেগম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পক্ষের নেত্রী। আহত সবাই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেত তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আজ সকাল আটটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আসেন। এ সময় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তারের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা দলটির কার্যালয়ের ভেতরের কক্ষে অবস্থান নেন। সভাপতি পক্ষের অনুসারীরা জানান, তাঁরা সাধারণ সম্পাদক পক্ষের অনুসারীদের সঙ্গে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক করতে যাবেন না। যাঁরা দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তাঁদের কোনো কর্মসূচিতে সঙ্গে নেবেন না। এ নিয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ হাতাহাতিতে থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের পাঁচজন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেতের নেতৃত্বে একটি পক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মামুন অর রশিদের নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করে। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তারের নেতৃত্বে অপর পক্ষ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেনের ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলে আসছিল।

ফেরদৌসী আক্তার অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে সভাপতি পক্ষের লোকজন প্রথমে তাঁর ওপর হামলা করেন। তাঁরা তাঁকে (ফেরদৌসী) কিল–ঘুষি মারেন। এ দৃশ্য তাঁর (ফেরদৌসীর) স্বামী মোশারফ হোসেন মুঠোফোন দিয়ে ভিডিও করেন। এ সময় তাঁর স্বামীর ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে। মোশারফের পরনের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঘটনাটি তিনি কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের জানিয়েছেন।

সংঘর্ষের সময় তাঁর গলার চেইন ছিনতাই হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেত। তিনি আরও বলেন, ‘ফেরদৌসী দলের সঙ্গে বেইমানি করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। তাই তাঁকে আমরা আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে নিষেধ করেছি। তিনি বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য এসেছিলেন। তাঁর স্বামী মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে সব সময় আসেন, এটা দলের কেউ পছন্দ করেন না।’

ঘটনায় আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন।