গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সশরীর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) তলব করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসি সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে তাঁকে ৭ মে ইসিতে তলব করা হয়। এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলকেও চিঠি দিয়েছে ইসি।
আজমত উল্লা খানকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম দাখিলের সময় আপনার পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ৩০ এপ্রিল ব্যাখ্যা তলব করা হয়। তা সত্ত্বেও ৪ মে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে আপনার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। যেখানে আপনি উপস্থিত ছিলেন, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। উল্লিখিত কার্যক্রম সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ৫-এর পরিপন্থী। আচরণ বিধিমালার বর্ণিত বিধান লঙ্ঘনের জন্য বিধি ৩২ অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আপনাকে ইতিপূর্বে সতর্ক করা সত্ত্বেও প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচারণা করার ফলে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে (কক্ষ নম্বর ৩১৫, নির্বাচন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা) ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ৭ মে বেলা ৩টায় এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হলো।’
অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৫ মে অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ৪ মে সভা করে মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে ভোট চেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। যেখানে প্রার্থী নিজে উপস্থিত ছিলেন, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও উল্লিখিত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ৫ এবং বিধি ২২-এর পরিপন্থী। আচরণ বিধিমালার বর্ণিত বিধান লঙ্ঘনের জন্য বিধি ৩২ অনুযায়ী প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে।
সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের উপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে ভোট চেয়ে সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ লঙ্ঘন করেছেন। বিষয়টি প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসানের গোচরে আনতে তাঁর একান্ত সচিবকে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। এর আগে ২৯ এপ্রিল যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন সামনে রেখে একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছুটির দিনে জরুরি বৈঠক করে ইসি। ওই বৈঠকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ৭ মে তলব এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে তাঁর একান্ত সচিবের মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
প্রসঙ্গত, আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য এর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসানকে সতর্ক করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকেও চিঠি দেয় ইসি।