নরসিংদীতে টেঁটাযুদ্ধে নিহত একজনের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ মর্গে, নিতে আসেননি স্বজনেরা
নরসিংদী রায়পুরার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের টেঁটাযুদ্ধে নিহত আলমগীর হোসেন ওরফে আলমের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তবে তাঁর স্বজনদের কেউ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে উপস্থিত না হওয়ায় আজ রোববার রাত আটটা পর্যন্ত লাশ হস্তান্তর করা যায়নি। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি, কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ।
আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই পক্ষের এই টেঁটাযুদ্ধে গুলি ও টেঁটায় বিদ্ধ হয়ে অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতাল, রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। দিনভর একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও রাত আটটা পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর তথ্যই নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
নিহত আলমগীর হোসেন ওরফে আলম (২২) রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের মেঘনা নদী তীরবর্তী দীঘলিয়াকান্দি গ্রামের জহর আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুরার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আধিপত্য বিস্তার ঘিরে চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির এবং সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সংঘর্ষে জড়িয়ে কিছুদিন ধরে এলাকাছাড়া ছিলেন আশরাফুল হকের সমর্থকেরা। তাঁরা এলাকায় ঢুকবেন, এ খবরে গত রাত থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ সকাল আটটার দিকে আশরাফুল হকের সমর্থকেরা এলাকায় ঢুকতে শুরু করলে রাতুল হাসানের সমর্থকেরা বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে অন্তত ১০ জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আলমগীর ওরফে আলমের মৃত্যু হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহমুদুল কবির বাসার জানান, আলমগীরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। লাশ হাসপাতালের মর্গেই রাখা আছে। আরও দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার এবং রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদের নেতৃত্বে তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। পরে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) সিদ্দিকুর রহমান।
রাত আটটায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, শতাধিক পুলিশ সদস্যকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই আছেন। ময়নাতদন্ত হলেও আলমগীরের লাশ বুঝে নিতে কেউ মর্গে না যাওয়ায় লাশ হস্তান্তর সম্ভব হয়নি। এর বাইরে আর কারও মারা যাওয়ার তথ্য পুলিশের কাছে নেই। এ পর্যন্ত মামলা করতে কেউ থানায়ও যাননি। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।