বিসর্জন দেখতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকতে মানুষের ঢল
দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শেষ হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, অভয়মিত্র ঘাট, কালুরঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় বিসর্জন দেখতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে মানুষের ঢল নামে।
ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বন্দনায় হিন্দুদের যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল, তার সাঙ্গ হলো বিজয়া দশমীতে। এবার তিথির কারণে মহানবমী পূজার পরই গতকাল শনিবার দশমীর বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কিছু কিছু পূজামণ্ডপে আজ দশমীর অঞ্জলি দেওয়া হয়। এরপর মণ্ডপে মণ্ডপে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন হয়।
রীতি অনুযায়ী আজ বিভিন্ন মণ্ডপে দেবী দুর্গাকে তেল, সিঁদুর আর পান-চিনি ও অশ্রুতে বিদায় জানায় ভক্তরা। সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় সিঁদুর খেলা। চট্টগ্রাম নগরে প্রতিবছরের মতো এবারও বিসর্জনের প্রধান স্থান পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট, অভয়মিত্র ঘাট এবং বিভিন্ন এলাকার পুকুরেও দেওয়া হয়েছে বিসর্জন।
সিটি করপোরেশন ও নগর পুলিশের সূত্র জানায়, আজ সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে পূজার্থীরা প্রতিমা বিসর্জনে আসতে শুরু করেন। বিসর্জন ঘিরে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিসর্জনের জন্য সৈকত এলাকায় ৫০০ পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।
বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয়। বিসর্জন দেখতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনও সৈকতে ভিড় করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের জানান, ফিরিঙ্গি বাজার ব্রিজ ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছে। বিসর্জন উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি পতেঙ্গায় সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মহালয়ার দিনে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা সন্তানদের নিয়ে কৈলাসের স্বামীর ঘর থেকে মর্ত্যে যাত্রা শুরু করেন। আর বিজয়া দশমীতে ফিরে যান। শাস্ত্রীয় মতে, এবার দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে মর্ত্যলোকে এসেছেন দোলায় চড়ে। আবার ফিরেও যাচ্ছেন ঘোড়ায়।
চট্টগ্রামে এবার শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২ হাজার ৪৫৮টি পূজামণ্ডপে। এর মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি ও জেলার ১৫টি উপজেলায় পূজামণ্ডপ রয়েছে ২ হাজার ১৬৫টি। জেলার ১৫টি উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি পূজামণ্ডপের মধ্যে প্রতিমাপূজা ১ হাজার ৫৯৪টি বাকিগুলো ঘটপূজা।