ইইউ-আমেরিকা কেউই সংবিধানের বাইরে কথা বলবে না: নৌ প্রতিমন্ত্রী
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আসুক আর আমেরিকা আসুক, তারা কেউই বাংলাদেশের সংবিধানের বাইরে কথা বলবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ রোববার দুপুরে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদ পুনর্মিলনী ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমাদের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আছে। আমেরিকা আমাদের অন্যতম ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (উন্নয়ন সহযোগী)। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেমনই। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্যবসা হয়। আমাদের অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। একসঙ্গে থাকতে গেলে অনেকে কথাবার্তা বলে, বলবে। আমাদের সংবিধান যেটা বলেছে, আমরা সেই আলোকেই চলি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আসুক আর আমেরিকা আসুক, তারা কেউই সংবিধানের বাইরে কথা বলবে না।’
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর থেকে শুনছি আন্দোলনের কথা। এই ১৫ বছরে ৩টা নির্বাচন হয়েছে। বলা হচ্ছে আন্দোলনের কথা। এ ধরনের আন্দোলনের কোনো ফলাফল পাচ্ছি না। বিএনপি যে অপরাধ করেছে, তারা যতই কান্নাকাটি করুক, জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। বরং সরকারের গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এবং সরকার যে সহমত পোষণ করে গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডে, তাতে অনেক বেশি তারা জায়গা পেয়ে গেছে। এই জায়গাকে কাজে না লাগিয়ে দেশবিরোধী কাজে ব্যবহার করছে তারা।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে অনেক কথাই বলা হবে। সেই কথাগুলো জনগণ গ্রহণ করছে কি না সেটা বড় কথা। আমরা দেখতে পাচ্ছি, জনগণ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় বিশ্বাস করে। কারণ, জনগণ এর সুফল পাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, যে যোগাযোগব্যবস্থা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা—সবকিছুর সুযোগ-সুবিধা বাংলাদেশের জনগণ পাচ্ছে। এখন এই ধরনের রাজনৈতিক ডামাডোলে জনগণ আর পড়তে চায় না। অতীতে আমাদের অনেক শিক্ষা হয়েছে। এখন আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা ২১ সালের লক্ষ্য পূরণ করেছি। ৪১ সালের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ করতে চাই। রাজনীতির মঞ্চ থেকে অনেক কথাবার্তায় হবে। সেই কথাবার্তায় সরকার ও জনগণের কোনো দৃষ্টি নাই। আমাদের দৃষ্টি সংবিধানে।’
ভবিষ্যতে যাবতীয় প্রক্রিয়া সংবিধানের আওতায় থাকবে উল্লেখ করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান আছে, আইনি কাঠামো আছে, বিচার বিভাগ আছে, সংসদ আছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এই বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বারবার সংবিধান ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। অসাংবিধানিক ধারায় গেছে, আমরা এর কোনো রেজাল্ট পাইনি। আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় আছি বলেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধির জায়গায় আছে। আত্মসম্মানের জায়গায় আছে। আজকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় আছি বলেই বিদেশি বেনিয়ারা বাংলাদেশের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। বাংলাদেশকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকেই নিতে হবে।’
এর আগে মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফয়জার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম সাইদুর রহমান খান, সহ–উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান স্থপতি প্যাট্রিক ডি রোজারিও প্রমুখ।