মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন বাক্‌প্রতিবন্ধী বাবা

ট্রেনে কাটা পড়ে বাবা ও মেয়ে মারা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হন। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার চকের ব্রিজ এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর রাণীনগরে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চকের ব্রিজ রেলগেটের পাশে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে ওই ব্যক্তি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন।

নিহত দুজন হলেন কোরবান আলী (৩৬) ও তাঁর মেয়ে কুহিলী আক্তার (১০)। তাঁদের বাড়ি রাণীনগর উপজেলা সদরের দক্ষিণ রাজাপুর (জিয়ানীপাড়া) গ্রামে। কোরবান আলী বাক্‌প্রতিবন্ধী ছিলেন। তিনি একজন মৎস্যজীবী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কোরবান আলী মেয়ে কুহিলীকে নিয়ে সকাল ৯টা থেকে চকের ব্রিজ এলাকায় রেললাইনের পাশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেন চকের ব্রিজ এলাকা অতিক্রম করছিল। এ সময় কোরবান আলী হঠাৎ মেয়েকে দুই হাতে চেপে ধরে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে তাঁদের দুজনের মৃত্যু হয়।

কোরবানের ভাতিজা মোমিনুল ইসলাম জানান, সকাল আটটার দিকে রাণীনগর বাজারে যাওয়ার কথা বলে কোরবান মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সাড়ে ১০টার দিকে জানতে পারেন চকের ব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর বাবা ও মেয়ের খণ্ডিত মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান এবং তাঁদের লাশ শনাক্ত করেন।

কোরবানের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রীর সঙ্গে কোরবানের পারিবারিক কলহ চলছিল। কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যান।

রাণীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেম উদ্দীন বসুনিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বাবা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সান্তাহার জিআরপি থানা-পুলিশের কাছে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়াসহ পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম সম্পন্ন করবে জিআরপি পুলিশ।

এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।