চট্টগ্রাম নগর ও আনোয়ারার তিন পাহাড়ে আগুন, কারণ জানা যায়নি
চট্টগ্রাম নগরের দুটি পাহাড় ও আনোয়ারার কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) ভেতরের একটি টিলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কেইপিজেড ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস সংলগ্ন পাহাড়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ওই দুই স্থানে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে নগরের লালখানবাজার এলাকার টাংকির পাহাড়ে লাগা আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজ সোমবার রাত নয়টার দিকে লালখান বাজারের পাহাড়ে হঠাৎ দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। আগুন নেভাতে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি ইউনিট কাজ করেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত কেউ এতে হতাহত হয়নি।
লালখান বাজারে যে স্থানে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত, তার থেকে কয়েক হাত দূরে নুরুজ্জামান খানের বাসা। জানতে চাইলে নুরুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, টাংকির পাহাড়ে রয়েছে ঘনবসতি। সেখানে বেশ কয়েকটি বেড়ার ও সেমিপাকা ঘর রয়েছে। কোনো একটা ঘরে হঠাৎ দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন স্থানীয় লোকজন। তবে কয়টি ঘর পুড়েছে, তা জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করেছে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনো হতাহত নেই।
এর আগে আজ সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসের পেছনে পাহাড়ে আগুন লাগে। প্রধান ছাত্রাবাস লাগোয়া এই আগুন দেখে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ের গাছপালা ও ঝরে পড়া পাতায় এই আগুন লাগে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তারা আগুন লাগার সংবাদ পায়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা স্টেশনের দুটি গাড়ি আগুন নেভাতে অংশ নেয়। চন্দনপুরা স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নুরুল হুদা জানান, মরা পাতা ও গাছে আগুন লেগেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিগারেটজাতীয় কিছু থেকে এটা হতে পারে। আগুন ছাত্রাবাস পর্যন্ত আসতে পারেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এদিকে আজ বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কেইপিজেডের ভেতরে দেয়াঙ পাহাড়ের একটি টিলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ বিকেল পাঁচটার সময় আগুন লাগে। তবে এতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, বিকেল পাঁচটার সময় কেইপিজেডের একটি কারখানা থেকে শ্রমিকেরা বের হওয়ার সময় পাহাড়ি টিলায় আগুন দেখতে পান। ওই সময় কেইপিজেডের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, এর আগে গত শুক্রবার রাতে কেইপিজেডের ভেতরে পাহাড়ে আগুন লাগে। ওই দিন রাতেই কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু ঘটে। পরে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা লাশ নিয়ে ছয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন।
স্থানীয় লোকজনের ধারণা, পাহাড়ে আগুন লাগার পাশাপাশি লোকজন হাতিকে উত্ত্যক্ত করায় হাতি মারমুখী আচরণ করে আর এতে করে জানমালের ক্ষতি হয়।
আগুন লাগার ব্যাপারে কেইপিজেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, কেইপিজেডের একটি কারখানার পাশে নিচু একটি টিলায় আগুন লেগে শুকনো লতাপাতা পুড়ে যায়। আমাদের ধারণা, কেউ সিগারেট খেয়ে সেখানে ফেলায় আগুন লাগে। এতে কারখানা বা আশপাশের তেমন ক্ষতি হয়নি।