চকরিয়ায় নতুন মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য জাফরের সঙ্গে আসামি তাঁর ছেলেও
সাড়ে পাঁচ বছর আগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদসহ নেতা-কর্মীদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। এতে সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় ১৮০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে। আসামি করা হয়েছে জাফরের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকীকেও। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত জাফরের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা হয়েছে।
গতকাল রোববার চকরিয়া থানায় মামলাটি করেন চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজেম উদ্দিন। মামলার বাদী নাজেম উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা যাঁরা আহত হয়েছিলাম, তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিই। চিকিৎসা শেষে থানায় এজাহার নিয়ে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো জাফর আলমের রাজনৈতিক প্রভাবে আমাকে মামলা দিয়ে জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।’
মামলার এজাহার ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর বেলা তিনটার দিকে ধানের শীষ প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাসিনা আহমদের প্রচারণার সময় চকরিয়া পৌর শহরের বায়তুশ শরফ রোডে হামলার শিকার হন সাবেক পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম। ঘটনার পরপর তাঁকে দেখতে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান হাসিনা আহমেদ। সেখান থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হামলাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এজাহার নিয়ে থানায় যাওয়ার পথে থানা সেন্টার মসজিদের সামনে হামলার শিকার হন হাসিনা আহমেদ ও তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীরা। তখন প্রাণ বাঁচাতে থানায় ঢুকে পড়েন হাসিনা আহমেদ। এ সময় মারধর ও গুলিতে আহত হন অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন নেতা-কর্মী। ভাঙচুর করা হয় শতাধিক জিপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক।
মামলায় চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু মুছা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল করিম, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীকেও আসামি করা হয়। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, মামলায় ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।
আওয়ামী লীগের নেতা সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধেও মামলা
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা, বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিসহ ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ১০০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে। গতকাল চকরিয়া থানায় মামলাটি করেন লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৩ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে মাতামুহুরী সেতুর পাশে বাদী জসিম উদ্দিনের মালিকানাধীন ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইকে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনি ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। প্রধান আসামি সালাহউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে আসামিরা গাড়িতে আগুন দেন বলে অভিযোগ করা হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের এই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে আসামি করা হয়নি। তবে চকরিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।