জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসছাড়া করার দাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার দাবিতে সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হলের সামনেছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ‘অবাঞ্ছিত’ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে লিটনকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রলীগের একাংশের এ বিক্ষোভের কারণে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি হলের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী নতুন কলা ভবন এলাকা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এসে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ফটকে পাল্টা অবস্থান নেন হাবিবুর রহমানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা উত্তেজনার পর রাত সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল দলের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রদের ৯টি হলে ছাত্রলীগের কার্যক্রম চলমান। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকেন সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান। আর মাওলানা ভাসানী হলে থাকেন সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল। ২৩ জানুয়ারি দুপুরে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অন্য হলের নেতা-কর্মীদের খোঁজ না রাখা, হল কমিটি না দেওয়া, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছয় হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ২৭ জানুয়ারি রাতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং ১০ দিনের সময় বেঁধে দেয়। তদন্ত চলমান অবস্থায় গতকাল বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেল হল ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও তদন্তাধীন অবস্থায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে দুই হলের কমিটি ঘোষণা করার প্রতিবাদে এবং লিটনকে ক্যাম্পাসছাড়া করতে একাংশের নেতা-কর্মীরা গতকাল এই বিক্ষোভ করেন।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব বলেন, ‘অবাঞ্ছিত সেক্রেটারি কীভাবে হল কমিটি দেয়, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ ছাড়া আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই দুটি হল কমিটি দেওয়া হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানি না, অবিলম্বে অবাঞ্ছিত হাবিবুর রহমানকে ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দেখবে। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না। ইতিমধ্যে আমি ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা বা বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।’