আবার রাতভর বিস্ফোরণে কাঁপল টেকনাফ

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টেকনাফ ট্রানজিট ঘাটে বিজিবির কড়া পাহারাসম্প্রতি তোলা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে আবারও তুমুল লড়াই শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাতভর বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী মংডু শহরের আশপাশ থেকে ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত একটা থেকে বিস্ফোরণ হতে থাকে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এমন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশে সংঘাত অনেক বেড়ে গেছে।

বিদ্রোহীরা মংডু শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ জন্য একের পর এক হামলা হচ্ছে। আর এসব কারণে মংডু শহরের পশ্চিম সীমান্তের টেকনাফ পৌরসভা, সাবরাং ইউনিয়ন ও দক্ষিণের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

সাবরাং ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শরিফ বলেন, টানা পাঁচ দিন শান্ত থাকার পর গতকাল বুধবার রাত থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। রাতভর বিস্ফোরণ এর আগে এমন তীব্র ছিল না। সীমান্ত এলাকার মানুষ সারা রাত জেগে কাটিয়েছে।

সীমান্ত এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর সীমান্তের ওপারে আবার সংঘাত শুরু হয় গত ১৮ জুন। ওই দিনের পর থেকে টেকনাফে ক্রমাগত বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সর্বশেষ গতকাল রাত থেকে আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আবারও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়েছে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টেকনাফ ট্রানজিট ঘাটে বিজিবির কড়া পাহারা। সম্প্রতি তোলা
সম্প্রতি তোলা

সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিকট শব্দের কারণে বাড়িঘরে বসবাস করা যাচ্ছে না। এখানকার মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত তীব্রতর হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কোনো রোহিঙ্গা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা রাত-দিন কঠোর নজরদারি করছে।