গোপালগঞ্জে নির্বাচন-পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও
গোপালগঞ্জে নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় গুলিতে ওসিকুর ভূঁইয়া নামের এক তরুণ নিহতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারী। বিক্ষোভকারীরা হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার অপসারণের দাবি করেছেন।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলীর কর্মী-সমর্থক এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
সমাবেশে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলী, আওয়ামী লীগের নেতা মুশফিকুর রহমান (লিটন), যু্বলীগ নেতা জাহেদ মাহমুদ (বাপ্পী), রনি হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা বক্তব্য দেন। সমাবেশের পর একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিলেও সাধারণ মানুষ তা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলো। আগামী সাত দিনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তাকে অপসারণ করা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
গত মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে পরাজিত প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুলিতে ওসিকুর ভূঁইয়া (২৭) নামের পরাজিত প্রার্থীর এক সমর্থক নিহত হন। তিনি চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের জলিল ভূঁইয়ার ছেলে এবং চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে চা-বিক্রেতা ছিলেন।
জয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পরাজিত প্রার্থী ও স্বজনদের। ঘটনার পর গত বুধবার তরুণের লাশ নিয়ে চেচানিয়াকান্দি এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। পরদিন বৃহস্পতিবার চন্দ্রদিঘলিয়া এলাকায় আবার মহাসড়ক অবরোধ করে শনিবারের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। অন্যথায় আজ (রোববার) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের বোন পারুল বেগম বাদী হয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূঁইয়াসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।