শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজেও রাজনীতি নিষিদ্ধ

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিল সভার সিদ্ধান্তে গতকাল সোমবার এই আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেশাজীবী সব ধরনের সংগঠন নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার বিকেলে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই আদেশ জারি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম। এই আদেশের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেশাজীবী সংগঠনের কার্যক্রম চালানো যাবে না। একই সঙ্গে ছাত্ররাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৮৫তম বিশেষ সভায় রোববার এই সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেট।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। গতকাল এই আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ফয়জুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন। শিক্ষার্থীদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ আগস্ট মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সভায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে বা হোস্টেলে ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের দলীয় ব্যানারে প্রকাশ্যে বা গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের দলীয় রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ বা উৎসাহিত করতে পারবেন না, এমন সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। পাশাপাশি কলেজ ক্যাম্পাসে দলীয় মিছিলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ছাত্রছাত্রীদের মিছিলে ডাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ ছাড়া হোস্টেলগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান বা বসবাস নিরাপদ রাখতে হোস্টেল সুপাররা সার্বিক নজর রাখার পাশাপাশি কোনো ব্যত্যয় হলে তা কলেজ প্রশাসনকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ২৩ আগস্ট রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল। হোস্টেলে অবস্থান করা ছাত্রলীগের দুই নেত্রী তাঁকে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ওই ছাত্রী। তবে কলেজে ওই সময় ছাত্রলীগের কোনো কমিটি ছিল না।

নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী অভিযোগ করেছিলেন, ওই দিন গভীর রাতে দুই দফায় হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রেখে গালাগাল, হুমকি ও মুঠোফোন তল্লাশি করা হয়েছে। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন