নাইমুলের খানদানি চায়ের স্বাদ নিতে মানুষের ভিড়
অস্থায়ী দোকানের সামনের সারিতে থরে থরে সাজানো নানা রকম চায়ের পাত্র। বেশির ভাগই মাটির। দুটি কেটলিতে অনবরত ফুটছে গরম পানি। দোকান ঘিরে মানুষের জটলা। টুংটাং শব্দ তুলে চা তৈরি করছেন এক তরুণ। তাঁর নাম নাইমুল ইসলাম (২৬)। বিশেষ এই চায়ের নাম খানদানি চা। প্রায় ১২ পদের চা মেলে নাইমুলের দোকানে।
নাইমুল ইসলামের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া গ্রামে। আড়াই মাস আগে উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে চায়ের দোকানটি করেন তিনি। স্টিলের ফ্রেমের তৈরি চা দোকানটি থেকে মাসে নাইমুলের আয় হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা দামের চা মেলে এখানে।
দোকানে চা বানাতে বানাতেই নাইমুল শোনালেন তাঁর গল্প। নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা নুরুল আবছার এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। ছোট ভাই চাকরি করে ঢাকার একটি জুতার কারখানায়। পড়ালেখায় তেমন ভালো ছিলাম না। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে চার বছর আগে তিন লাখ টাকা খরচ করে ওমানে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে তিন বছর কাজ করার পর প্রায় খালি হাতে বাড়ি ফিরে আসি। বিদেশ যাওয়ার আগে ঢাকা শহরে কিছুদিন একটা চায়ের দোকান চালিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা করেই শুরু করি এই চায়ের দোকান। চা বিক্রি করে বেশ ভালো আয় হচ্ছে এখন।’
নাইমুলের দোকানের সামনের অংশে চোখে পড়ে হরেক রকম চায়ের নাম ও মূল্যতালিকা। দুধ চা, রং চা তো আছেই। সেই সঙ্গে আছে চকলেট চা, মালাই চা, হানি জিনজার চা, গ্রিন টি, ক্যারামেল চা, তন্দুরি চাসহ চায়ের নানান পদ। সবচেয়ে দামি হচ্ছে চকোব্লাস্ট চা। এক কাপ চকোব্লাস্ট চা খেতে গুনতে হয় ১০০ টাকা। তবে সব ছাপিয়ে খানদানি চা নাইমুলের দোকানের বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। প্রতি কাপ এই চা ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। রাতের বেলায়ও মানুষ ভিড় করেন তাঁর দোকানে।
বারইয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা রবি করিম নাইমুলের দোকানের নিয়মিত গ্রাহক। তিনি বলেন, নাইমুলের চায়ের স্বাদ বারইয়ারহাট পৌর বাজারে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। দাম বেশি হলেও অনেকেই শখ করে চা খেতে আসেন এখানে। বেড়াতে আসা অতিথিদের নিয়ে তিনি এখানে আসেন।