চাকা ফাটার পর ট্রাকে ধাক্কা লরি ও বাসের, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ৫ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ
কুমিল্লার দেবীদ্বারে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় হঠাৎ একটি ট্রাকের সামনের চাকা ফেটে যায়। এরপর পেছন থেকে প্রথমে একটি লরি ও পরে লরির পেছনে যাত্রীবাহী একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে উল্টে গিয়ে বাসের অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মহাসড়কের উপজেলার চরবাকর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ যায়। বেলা আড়াইটার দিকে এক পাশ দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকায় মহাসড়কের উভয় দিকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটারে যানজট তৈরি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে মিরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক পারভেজ আলী বলেন, তাঁদের উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। এক পাশ দিয়ে এখন দুই দিকের গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সেটার জন্য আরও সময় লাগবে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।
স্থানীয় লোকজন ও হাইওয়ে পুলিশ জানায়, আজ সকাল ৯টার দিকে দেবীদ্বারের চরবাকর এলাকায় চলন্ত অবস্থায় কুমিল্লামুখী একটি ট্রাকের সামনের চাকা ফেটে যায়। এ সময় পেছনে থাকা দ্রুতগতির একটি লরি প্রথমে ট্রাকটিকে ধাক্কা দিলে লরি সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে লরির পেছনে থাকা রয়েল সুপার কোচ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস লরিতে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি উল্টে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। এতে বাসের অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনার পর থেকে মহাসড়কে ট্রাক ও লরি পড়ে থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা এমদাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বাসের যাত্রীরা বেশি আহত হয়েছেন। এলাকাবাসী ও পুলিশ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ থেকে কুমিল্লাগামী একটি বাসের চালক আবদুল করিম বলেন, তিনি দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির পেছনে ছিলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তীব্র কষ্টে অনেক যাত্রী হেঁটে দুর্ঘটনাস্থল পার হয়েছেন। উদ্ধারকাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক পারভেজ আলী প্রথম আলোকে বলেন, বড় রেকার ছাড়া ট্রাক ও লরি সরানো সম্ভব ছিল না। তাঁদের রেকারটি ছোট। পরে ময়নামতি থেকে রেকার এনে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। এ ছাড়া তিনটি গাড়ি একসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।