নরসিংদীতে কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর ৩৪ দিন পর মৃত্যু
নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ৩৪ দিন পর মো. সুমন মিয়া (২০) নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২০ জুলাই মাধবদী থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
সুমন মিয়া নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী পৌরসভার সিদ্দিকনগর এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে। মাধবদী জালপট্টি জামেয়া-ই-ইমদাদিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে সবজি বিক্রি করতেন তিনি।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর বড় ভাই জুলহাস মিয়া। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন সুমন। নরসিংদীসহ সারা দেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল, তখন তাঁরা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারেননি। ২০ জুলাই কারফিউর প্রথম দিনে মাধবদী থানার সামনে আন্দোলন চলাকালে পেটে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিটি তাঁর পেটে ঢুকে পাকস্থলী ছিদ্র করে পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়।
জুলহাস মিয়া বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সুমনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ওই দিনই তাঁকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক মাস ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সময়ের মধ্যে তিনর তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়। শেষ দিকে ঘা হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে বলেছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। বর্তমানে তাঁর লাশ ওই হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত শেষ হলে লাশ নিয়ে নরসিংদীতে ফিরবেন স্বজনেরা।
সুমনের মা আমিরুন বেগম বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিটা দিন মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করেছে সুমন। তাকে সুস্থ করে তুলতে মানুষের কাছে সাহায্যও চেয়েছিলাম। সব যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে আজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। যে দিনটা দেখার জন্য আন্দোলনে গেল, সেটা দেখে যেতে পারল না।’