জাহাঙ্গীরনগরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকাণ্ড তদন্তে আবার কমিটি গঠনের দাবি

ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডে আবার স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সংঘটিত সহিংস ঘটনা, প্রক্টর অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যে দায়িত্বশীলতার অভাব প্রকাশ পেয়েছে, তা সবার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতিতে স্পষ্ট হয়েছে যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশে একাধিকবার আক্রমণ চালিয়ে নয়, প্রক্টর অফিসেও সরাসরি প্রহার করে শামীম মোল্লাকে গুরুতর আহত করে। পরে পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারি করা ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সনদ স্থগিত শাস্তি হিসেবে অপ্রতুল। ভবিষ্যতে এ–জাতীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এই শাস্তি কার্যকর ভূমিকা রাখবে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের নেতারা বলেন, ‘পুলিশি তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে এ রকম স্পর্শকাতর একটি মামলায় অভিযুক্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাল, তা আমাদের বিস্মিত করেছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদক্ষেপের দ্বিচারিতাও লক্ষণীয়। জলাধারে পাখি হত্যার শাস্তি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাসের বহিষ্কার। অথচ শামীম মোল্লাকে একাধিকবার আক্রমণ, প্রক্টর অফিসে পেটানো এবং পরে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যুর মতো গুরুতর অপরাধের জন্য জড়িত ব্যক্তিদের মাত্র ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করতে একধরনের পক্ষপাতমূলক অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং এতে প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।’

শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডের সত্যতা ও দায়িত্ব নির্ধারণে কোনো প্রভাবিত পক্ষের অনুপ্রবেশ ছাড়াই অনতিবিলম্বে একটি স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

নেতারা বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি কেন তাদের অফিসে হামলাকারীদের প্রতিহত করেনি এবং শামীম মোল্লাকে সুরক্ষা দেয়নি, তা তদন্ত করতে হবে। অবহেলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। তদন্তে যেসব শিক্ষার্থী বা সাবেক শিক্ষার্থী প্রমাণিতভাবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি প্রদান এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সনদপত্র বাতিল করতে হবে।