কুষ্টিয়ায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বিদ্যালয়ের সামনে প্রাণ গেল ছাত্রীর
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বিদ্যালয়ের সামনে এক ছাত্রীর প্রাণ গেছে। আজ সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের চড়াইকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রীর নাম সামিয়া আফরিন ওরফে সোহাগী (৭)। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালকসহ আরও এক ছাত্রী আহত হয়েছে। তাদের কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত সামিয়া আফরিন ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের চড়াইকোল এলাকার দিনমজুর সোহান শেখের মেয়ে। আহত হালিমা আক্তার মুন্নি (৭) একই এলাকার হালিম আলীর মেয়ে ও একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। আর মোটরসাইকেলচালক কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর রাতুলপাড়ার হেকমত আলীর ছেলে নাইমুল হোসেন (২৬)। তিনি প্রসাধনী ব্যবসায়ী।
এ ঘটনার পর মোটরসাইকেলের চালকের বিচারের দাবিতে ওই বিদ্যালয়ের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করেন। বিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে গতিরোধকের দাবি জানান তাঁরা। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দাবি মেনে নেয় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সামনে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক। সব সময় দ্রুতগতিতে যানবাহন চলাচল করে। আজ দুপুরে বিদ্যালয়ের সকাল শিফটের ছুটির পর সহকারী শিক্ষক মুক্তা রানী শিকদার ও স্থানীয় মিঠুন আলী শিক্ষার্থীদের সড়ক পার করছিলেন। এ সময় দ্রুতগতিতে একটি মোটরসাইকেল কুমারখালীর দিকে যাচ্ছিল। বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে চালক মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই সামিয়া নিহত হয়। আরেক ছাত্রী হালিমা ও চালক নাইমুল গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তা রানী শিকদার জানান, বিদ্যালয় ছুটির পর তিনি শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপারে সহযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ দ্রুতগতিতে একটি মোটরসাইকেল এসে দুই বাচ্চাকে সজোরে ধাক্কায় দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সামিয়া আফরিন মারা যায়। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গতিরোধকের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহসীন হোসাইন বলেন, বিদ্যালয় এলাকায় গতিরোধক নেই। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতি থাকার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে প্রায় ৩০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ করে রাখেন। পরে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। মোটরসাইকেলটি জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।