আদিতমারীতে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে উপজেলা শহরের গ্রামীণ ব্যাংকসংলগ্ন মমিনের গ্যারেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা ও তিনটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। শনিবার বিকেল চারটায় লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে সরকারি আদিতমারী জি এস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গ্রামীণ ব্যাংকসংলগ্ন মমিনের গ্যারেজ এলাকায় পৌঁছালে অপর পক্ষের নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। একপর্যায়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য, স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ আহত হয়েছেন। এই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন পদবঞ্চিত নেতা আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতি।
সংঘর্ষের পর সরকারি আদিতমারী জি এস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
রফিকুল আলম অভিযোগ করেন, কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতির নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ইট-পাথর ছুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এতে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে মাহমুদ ওমর চিশতি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। বাবা বিএনপি শাসনামলে খুন হয়েছেন। অথচ আমাদের পদ না দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করেছে, ওরা পুলিশ দিয়ে আমাদের আটকাতে চায়। ঘোষিত কমিটিতে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে, যা মানা সম্ভব নয়। তাই রাজপথে এই প্রতিবাদ।’
সম্প্রতি আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ করে আসছিলেন। পদবঞ্চিতদের মধ্যে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল ইসলাম ওরফে সুরুজের ছেলে মাহমুদ ওমর চিশতিও আছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে বিবাদ চলছিল।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোক্তারুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা ও তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।