সাবেক মন্ত্রী মোকতাদিরের ‘ক্যাশিয়ার’ কৃষক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের নেতা হামিদুল হককে (৬০) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে গ্রেপ্তারের পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনা হয়। হত্যাসহ চারটি মামলার এজহারনামীয় আসামি তিনি।
হামিদুল হক (হামদু মিয়া) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। একসময় তিনি মোকতাদিরের বাড়ি দেখাশোনা করতেন। সেখান থেকে তিনি জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন তিনি।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামিদুল হকের বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি হত্যা এবং একটি করে গুম ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা আছে। চারটি মামলার এজহারনামীয় আসামি তিনি। দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। বুধবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সহায়তায় চকবাজার থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় আনে পুলিশ। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তাঁকে আদালতে তোলা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হামিদুল হক গত ১৫ বছর মোকতাদিরের গাড়িবহরের সঙ্গে চলাচল করতেন। নিজেকে মোকতাদিরের ভাই বলে বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় দিতেন। মোকতাদিরের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম তিনি। জেলার ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি কাজ, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতেন। মোকতাদির গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর জেলা গণপূর্ত কার্যালয় পুরোপুরি দখলে নেন হামিদুল। ওই দপ্তরের প্রধান ফটকের ভেতরে সার্বক্ষণিক তাঁর গাড়ি এবং দপ্তরে তাঁর পৃথক কক্ষ করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য ও জমি দখলের অভিযোগ আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের চকবাজার থানা এলাকা থেকে বুধবার রাতে হামিদুলকে সিএমপি পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে। অপরাধের প্রমাণ, তথ্য সংগ্রহসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।