‘বন্যার পানির লাগি পাওয়ো চুলকানি উঠছে (পা চুলকাচ্ছে)। পাওয়োর মাঝে গোটা উঠি গেছে। ওখন ইগুইন চিকিৎসা করাইতাম না ঘরোর চাইরজনের (চারজনের) খানির ব্যবস্থা করতাম, ইখান লইয়া চিন্তাত আসলাম। ওখন খানির সহযোগিতা ইগুইন পাইয়া আরাম পাইছি। খানির চিন্তা আফাতত কদিন না করিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাইব।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা পেয়ে এসব কথা বলেন সিলেট সদর উপজেলার জাঙ্গাইল গ্রামের বন্যাকবলিত ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফয়জুল হক।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার জাঙ্গাইল এলাকার সফির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে ফয়জুল হকের মতো বন্যায় বিপাকে পড়া ৫০টি পরিবারের সদস্যদের প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়। পরে বিকেলে সিলেট নগরের সারদা হল ভবন প্রাঙ্গণে আরও ৫০টি পরিবারের সদস্যদের ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়।
সহায়তা পাওয়া ১০০ পরিবারের প্রত্যেকের জন্য ছিল ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ।
ত্রাণসামগ্রী পেয়ে খুশি জানিয়ে পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের রহমতুন বেগম (৭৫) বলেন, ‘ঘর মেরামতের পাশাপাশি খাবারের চিন্তা ছিল। আজ সহায়তা পেয়ে ভালো লাগছে।’
সফির উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠের ত্রাণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. রশিদ আহমদ, প্রথম আলো ট্রাস্টের নির্বাহী শামীম আহমেদ, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য আছাব উদ্দিন, শাহজাহান আহমেদ, জসিম উদ্দিন, প্রথম আলো বন্ধু সভা সিলেটের সভাপতি অন্তর শ্যাম, সাধারণ সম্পাদক সমীর বৈষ্ণব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল রায়, গায়ত্রী বর্মন, দপ্তর সম্পাদক সমরজিৎ হালদার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, ম্যাগাজিন সম্পাদক শেখ ফয়সাল, সদস্য সাজন বিশ্বাস ও সৈনিক বৈষ্ণব।
বিকেল পাঁচটায় সিলেট নগরের কিনব্রিজ এলাকায় সারদা হল প্রাঙ্গণে বন্যায় বিপাকে পড়া ৫০টি পরিবারের সদস্যদের ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শামসুল আলম, সিলেট সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত, প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ প্রমুখ। এ ছাড়া প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণসহায়তা পাওয়া সিলেট নগরের বাদামবাগিচা এলাকার বাসিন্দা কুলসুমা বেগম (৫৫) বলেন, বন্যার পানি ঘরে হাঁটুসমান ছিল। ঘরের বাইরে বুকসমান ছিল। এরপরও তাঁরা ঘর ছেড়ে বাইরে যাননি। এ সময় চিড়া-মুড়ি খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। এখন সহায়তা পাওয়ায় কয়েক দিনের চিন্তা দূর হয়েছে।
কুলসুমা বেগমের প্রতিবেশী মিনা বেগম (৫৪) ত্রাণসহায়তা পেয়েছেন। তিনি বলেন, এত দিন কোথাও সহযোগিতা পাননি। আজ সহযোগিতা পাওয়ায় ভালো লেগেছে।
প্রথম আলো ট্রাস্টের এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে আইডিএলসি ফিন্যান্স পিএলসি। বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুদানের টাকায় বন্যার্ত মানুষের কাছে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল। হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।