কয়লাসংকটে আবার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

কয়লাভিত্তিক বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। সম্প্রতি তোলাছবি: প্রথম আলো

যান্ত্রিক ত্রুটি কাটিয়ে উৎপাদনে ফেরার কয়েক দিনের মাথায় আবার বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কয়লাসংকটে চালু থাকা একমাত্র ইউনিটটি আজ রোববার ভোর থেকে বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আনোয়ারুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, কয়লাসংকটের কারণে রাত সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কয়লা আমদানির জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ৮ আগস্ট কয়লা এসে পৌঁছালে কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি আবার উৎপাদনে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন

এর আগে কয়লাসংকটে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একাধিকবার বন্ধ হয়েছে। গেল বছরের ১৭ ডিসেম্বর বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে এ নিয়ে সাত মাসে ছয়বার বন্ধ হলো বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। সর্বশেষ টারবাইন ত্রুটির কারণে ১৬ জুলাই রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের ঘূর্ণমান যন্ত্র (টারবাইন) মেরামত শেষে ২০ জুলাই দুপুরে উৎপাদনে ফেরে কেন্দ্রটি। এর মাত্র ১০ দিনের মাথায় কয়লাসংকটে আবার কেন্দ্রটি বন্ধ হলো।

ডলার-সংকটে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি—কয়লা আমদানি করতে না পারায় বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার এক মাসের মধ্যে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি প্রথমবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৫ এপ্রিল, ২৩ এপ্রিল, ৩০ জুন ও ১৬ জুলাই যান্ত্রিক ত্রুটিসহ নানা জটিলতায় বারবার বন্ধ হয়েছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

আরও পড়ুন

ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি ইউনিট আছে, একেকটি ৬৬০ মেগাওয়াটের। দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিটটি গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে। ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিট এখনো বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসেনি। জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরের দিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে পারে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লার একটি জাহাজের জন্য ইতিমধ্যে ঋণপত্র খোলার প্রক্রিয়া চালু আছে। এই জাহাজের কয়লা ৮ আগস্টের মধ্যে দেশে আসার কথা আছে। তখন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার চালু হতে পারে।

আরও পড়ুন

১৬ জুলাই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হওয়ার পর পাঁচ দিন বন্ধ থাকে। তার আগে ৩০ জুন রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ইলেকট্রিক্যাল জেনারেটর ইউনিট প্রোটেকশনে ত্রুটি দেখা দেয়। ১০ দিন উৎপাদন বন্ধ থাকার পর ১০ জুলাই সন্ধ্যা সাতটায় আবার উৎপাদনে ফেরে। চার দিনের মাথায় ১৩ জুলাই রাত ১০টা ২৯ মিনিটে কারিগরি সমস্যার কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রথম ইউনিট বন্ধ হওয়ার আগে গত শনিবার সকাল ৭টার দিকে ৫০১ মেগাওয়াট পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এরপর রাত ১২টার দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমে আসে ৩৮২ মেগাওয়াটে। পরে ধীরে ধীরে বিদ্যুতের লোড কমিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাত ৩টা ৩৮ মিনিটে একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন