নারায়ণগঞ্জে সেচ প্রকল্পে বাধা দেওয়ার জেরে দুই বিএনপি নেতাকে মারধর

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে সেচ প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মারধর করে বিএনপির দুই নেতাকে পানিতে চুবানোর ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার দুপুরেছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে কৃষিজমির সেচ প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকে মারধর করে জলাশয়ের পানিতে ফেলে চুবানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক নারী ইউপি সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার পিচ কামতাল এলাকার জহিদ্দার বিলে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার দুই বিএনপির নেতা হলেন মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার। আহত ব্যক্তিরা হলেন সেচ প্রকল্পের মালিক আমান উল্লাহ (৪০), তাঁর স্ত্রী মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য লাভলী বেগম (৩৬), তাঁদের ছেলে সোহান (২১) এবং আহাদ আলী (৫৫) ও বাহাউদ্দীন (৩৫)।

এ ঘটনায় জাহিদ খন্দকার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন। গতকাল রাতে মামলাটি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাজুরবাগ এলাকার আমান উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে জহিদ্দার বিলে ধানখেতে সেচ দিয়ে আসছেন। বালিগাঁও এলাকার হজরত আলী মিয়ার ছেলে পাপ্পু ও পিচকামতাল এলাকার মৃত সায়েদ আলী মিয়ার ছেলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়াসহ ১০ থেকে ১২ জন সেচের কারণে ভাঙনের অভিযোগ করেন। তাঁরা আমান উল্লাহর সেচ প্রকল্পের কাজে দিচ্ছিলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে আমান উল্লাহর সেচ প্রকল্পের কাজে বাধা দেন ২০ থেকে ২৫ জন। তাঁরা আমান উল্লাহর ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এ সময় আমান উল্লাহর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। এ হামলায় আমান উল্লাহর স্ত্রী ইউপি সদস্য লাভলী বেগমসহ পাঁচজন আহত হন। এলাকাবাসী বিএনপির নেতা তারা মিয়া ও জাহিদ খন্দকারকে জলাশয়ের পানিতে ফেলে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

লাভলী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেচ প্রকল্প এলাকার ভেঙে যাওয়া খুঁটি ঠিক করার ব্যবস্থা করেছেন তাঁর স্বামী আমান উল্লাহ। কিন্তু তাঁরা এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আমি ওই এলাকায় মেম্বার; সেখানে গিয়েছি। তাঁরা আমাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের প্রতিরোধ করেছেন।’

তবে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে এই এলাকার নদী–তীরের মাটি কেটে বিক্রি করেন আমান উল্লাহ ও তাঁর লোকজন। এবার যাতে সেটি করতে না পারেন, এ জন্য তিনি, জাহিদ খন্দকারসহ গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে গিয়ে বাধা দেন। তখন আমান উল্লাহর সহযোগী মুছাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বাহাউদ্দিন পুলিশের সামনেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। ওই সময় তিনি পাশের জলাশয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পান।