সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অন্তত ৩০টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আজ রোববার সকালে নির্ধারিত সময়ে কারখানায় উপস্থিত হয়েছেন শ্রমিকেরা। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কারখানায় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ না করে শ্রমিকেরা বসে থাকায় সেগুলো ছুটি দেওয়া হয়।
পরে বিষয়টি আশপাশের কারখানায় জানাজানি হওয়ার পর নিরাপত্তার কারণে সেগুলোতেও ছুটি দেওয়া হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩০টি কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর কর্মকর্তারা। এর বাইরেও আরও বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা কাজ না করে বসে আছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
গত কয়েক দিনে যেসব এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে, সেসব এলাকায় আজও নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকার পার্ল গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেডের সামনের মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা।
এ ছাড়া আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সকালে নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকেরা কারখানায় উপস্থিত হয়েছেন। আল মুসলিম, মণ্ডল ও নিউএইজ গ্রুপের কারখানার শ্রমিকেরা তাঁদের দাবি আদায় না হওয়ায় কাজ বন্ধ করে বসে থাকায় কারখানাগুলো ছুটি দেওয়া হয়। এ ছাড়া আশপাশের কারখানা ছুটির বিষয়টি জানার পর নিরাপত্তার স্বার্থে সব মিলিয়ে অন্তত ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখে বসে আছেন বলে জানতে পেরেছেন।
শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১০ দিন বন্ধ ছিল নাসা গ্রুপের কারখানাগুলো। আজ কারখানা খুলে দেওয়ার পর শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। নাসা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার নাইম উল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ দিন বন্ধ থাকার পর আমরা সমস্যার ইতিবাচক সমাধানের মধ্য দিয়ে আজ কাজ শুরু করতে পেরেছি। শ্রমিকেরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন। উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মালিক-শ্রমিক সবাই সম্মিলিতভাবে সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।’
বাংলাদেশ গামের্ন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়ায় ২ শতাংশের কম কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। গিল্ডান, নাসা গ্রুপসহ যেসব কারখানার মালিক আন্তরিক ছিলেন, সেগুলোর সমাধান হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ একটু আন্তরিক হলেই সমস্যার সমাধান। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছ, তাঁদের অধিকাংশ দাবিগুলোর বিষয়ে শ্রম আইনেই বলা আছে। সে ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ শুধু শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুসারে কারখানা পরিচালিত হবে এবং এর বাইরে হাজিরা বোনাসের বিষয়টি উভয় পক্ষ আলোচনা করে ঠিক করে নিলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।